1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন

ভিক্ষুকরা সিন্ডিকেটের উপার্জনের হাতিয়ার!

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ১২৭৮ বার দেখা হয়েছে

আমরা বুঝব কী করে যে একজন ভিক্ষুক – সে সিন্ডিকেটের সদস্য নাকি আসলেই গরিব?

আমি তো গরিব অসহায়দের সাহায্য করতে চাই। কিন্তু আমার হাতের কাছে যে গরিব ব্যক্তিটি আছে সে কোনো সিন্ডিকেটের সদস্য নাকি আসলেই গরিব বুঝব কী করে?

আসলে ভিক্ষুক যত, যারা ভিক্ষা করে মোড়ে মোড়ে এরা সব সিন্ডিকেটের সদস্য। সিন্ডিকেটের সদস্য বলাটা ভুল। সিন্ডিকেট তো বড় জিনিস। তাদের উপার্জনের হাতিয়ার হচ্ছে এরা।

সাহায্য করতে চাইলে মাটির ব্যাংকে দান করুন অথবা এতিমের দায়িত্ব নিন

তো অতএব আপনি গরিব-অসহায়দের সাহায্য করতে চাইলে কী করবেন, আপনার টাকা থাকলে মাটির ব্যাংকে অল্প অল্প টাকা হলে সঞ্চয় করবেন।

যদি অনেক টাকা থাকে, তাহলে একজন এতিমের দায়িত্ব নেবেন বা দুইজন এতিমের দায়িত্ব নেবেন।

কোনো অসুবিধা নাই। কারণ আপনি যদি সাহায্য করতে চান সাহায্য করার সুযোগ রয়েছে।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দান একত্র হয়ে মানুষের যে কত উপকার হতে পারে…

এই যে দান দানের ফলে কিছু কিছু কাজ যে আমরা করছি অদ্ভুত কিছু কাজ। মানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দান একত্র হয়ে মানুষের কত উপকার হতে পারে!

আমরা খুব নীরবে এই কাজটি শুরু করেছিলাম। দুই বছর পরে যখন কাজটা একটা পর্যায়ে গিয়েছে এবং এখন সেই নাইক্ষ্যংছড়ি একেবারে দূরদূরান্ত থেকে যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে যারা দেখতে পান না যারা প্র্যাকটিকেলি অন্ধই ছিলেন ছানির কারণে। তারা যখন দেখতে পাচ্ছেন!

শুধু অর্থ নয়, উদ্যোগটাও খুব বড় জিনিস

সবটাই যে অর্থ তা না, উদ্যোগটা একটা খুব বড় জিনিস। দূরদূরান্তের একজন মানুষ সে জানে না কার কাছে যাবে কোথায় যাবে।

আমাদের কর্মীরা সেই দূরদূরান্তে গিয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করেছে তাদেরকে নিয়ে আসছে তাদেরকে অর্গানাইজ করেছে চিটাগংয়ে নিয়ে আসছে।

৩৫০ জন মানুষ আগে যে-রকম দেখত, আবার সেইরকম দেখতে পাচ্ছে

কারণ চক্ষু অপারেশন তো খুব সেনসেটিভ ব্যাপার। চিটাগংয়ে এনে আবার ফলোআপ করা। তারা যাতে মানে ফলোআপ করতে পারে এজন্যে রাজবিলাতে একমাস পর্যন্ত তাদেরকে রেখে দেয়া হয়েছে যে, বাড়ি গেলে তো কী করবে না করবে। কারণ ঠিক ঐভাবে তো সচেতন না।

এবং আজকে ধরুন ৩৫০ জন মানুষ আগে যে-রকম দেখত তারা সেইরকম দেখতে পাচ্ছে।

আর ছোট্ট বাচ্চা যারা হয়তো কোনোদিন পৃথিবীর রং রূপ দেখে নাই তারা দেখছে। এবং এটা সম্ভব হয়েছে কেন? আমাদের সম্মিলিত চেষ্টার ফলে।

এই ক্ষুদ্র দানের উসিলায় মানুষের যে উপকার করছেন, এর যে-কোনো একটা উসিলায় আল্লাহ ক্ষমা করতে পারেন

এটা কোনো বিত্তবান ব্যক্তি যদি মনে করে যে, আমি একশ কোটি টাকা খরচ করব, পারবে না। তার টাকা অপচয় হয়ে যাবে। টাকার সাথে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে সম্মিলিত প্রয়াস, আন্তরিক প্রয়াস।

অতএব যখনই আপনার দানটাকে জমা করছেন ক্ষুদ্র দানকে জমা করছেন এই চেহারাগুলোকে খেয়াল করবেন। যে আল্লাহ এই ক্ষুদ্র দানের উসিলায় মানুষের যে উপকার করছেন এর যে-কোনো একটা উসিলায় আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করতে পারেন। এবং আল্লাহ আমাদেরকে ইহকালীন এবং পরকালীন পরিত্রাণ দিতে পারেন।

আমাদের সমস্ত কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করি স্বঅর্থায়নে এবং স্বশ্রমে

তো অতএব ক্ষুদ্র দান জমা করবেন। মাটির ব্যাংকে যখন জমা হয়ে গেল তখন এটা পৌঁছে দেবেন এবং আবার নতুন ব্যাংক নিয়ে যাবেন।

এবং এই ক্রম আমরা যদি অব্যাহত রাখি তো আমাদের এই কাজের ধারাটাও আমরা অব্যাহত রাখতে পারব।

আপনারা জানেন যে আমাদের সমস্ত কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করি স্বঅর্থায়নে এবং স্বশ্রমে।

নিজেরা পরিশ্রম করি, নিজেরা অর্থ যোগাড় করি। নিজেরা সে অর্থ ব্যয় করি।

রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, যে একজন এতিমের দায়িত্ব নিবে সে জান্নাতে আমার পাশে থাকবে

এবং অর্থ যোগাড় এবং ব্যয় করার মধ্যে মজাটা কী?

রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, যে একজন এতিমের দায়িত্ব নিল এবং তাকে সম্মানজনক আচরণের মধ্য দিয়ে তাকে বড় করল, জান্নাতে সে আমার পাশাপাশি থাকবে।

কীরকম, উনি দুই আঙুল উঁচু করে এভাবে দেখিয়ে বলেছেন। এই দুই আঙুল যে-রকম পাশাপাশি থাকে জান্নাতে সে আমার পাশে থাকবে।

এবং যিনি আর্থিক দায়িত্ব নিচ্ছেন, শুধু তা না। তার যে লালনকারী, তাকে যে লালন করছে, এবং এই যে অর্থ…

যিনি দান করছেন তিনি যে-রকম সওয়াবের অধিকারী হচ্ছেন, যিনি সংগ্রহ করছেন বা বিতরণ করছেন, তিনিও একই সওয়াবের অধিকারী হচ্ছেন

ধরুন আমরা আমাদের হিসেবে দেখেছি যে, আমাদের ওখানে আট হাজার টাকা মাসে হলে একজন এতিমের আর্থিক দিকটা আমরা সলভ করতে পারি তার সমস্ত প্রয়োজনটা পূরণ করে।

তো এখন এই আট হাজার টাকা যিনি দিচ্ছেন তিনি যে-রকম সওয়াবের অধিকারী হচ্ছেন, এই আট হাজার টাকা যিনি সংগ্রহ করছেন তিনিও একই সওয়াবের অধিকারী হচ্ছেন এবং এই আট হাজার টাকা যিনি বিতরণ করছেন। অর্থাৎ এটাকে কাজে লাগাচ্ছেন। তিনিও সমান সওয়াবের অধিকারী হচ্ছেন।

পুরোটা দিতে না পারলে আংশিক দিন অথবা পরিচিতজনদের উদ্বুদ্ধ করুন, যে আমরা পাঁচজনে মিলে একজন এতিমের দায়িত্ব নেবো

অতএব আপনার আট হাজার টাকা দিতে পারছেন না নো প্রবলেম। আপনি দুইশ টাকা দেন, পাঁচশ টাকা দেন আরো সাড়ে সাত হাজার টাকা আপনি সংগ্রহ করেন।

আরো পাঁচজনকে ১০ জনকে একত্র করেন। আত্মীয়দের একত্র করেন যে ঠিক আছে আমরা পাঁচজনে মিলে একজন এতিমের দায়িত্ব নেবো।

আপনি এটাকে অর্গানাইজ করলেন এবং আপনি আট হাজার টাকা দান করলে যে সওয়াব হতো সে একই সওয়াবের অধিকারী আপনি হবেন।

কারণ আল্লাহতায়ালা তো চাইবেন যে আচ্ছা একটা উসিলা দরকার। আচ্ছা এই কাজের উসিলায় মাফ করে দিলাম যাহ যাহ। কিন্তু একটা উসিলা তো থাকতে হবে।

আমাদের পাপের তো শেষ নাই, গুনাহর শেষ নাই। তো এই কাজগুলো হচ্ছে এই উসিলা। যে আল্লাহকে একটা উসিলা দেওয়া। আচ্ছা এটার জন্যে মাফ করে দিলাম।

আমরা কিন্তু খরচ এখন কেউ কম করছি না!

অনেক খরচ আমরা করছি। আমরা কিন্তু খরচ এখন কেউ কম করছি না!

আজকাল এলিফ্যান্ট রোডে এক কাপ কফি খেতে নাকি আড়াইশ তিনশ টাকা চলে যায়। তখন কিন্তু আমার হিসাব হয় না। হিসাব আমি করি ভালো কাজে।

কিন্তু দানের সময় আমাদের হিসাবটা চলে আসে

কিন্তু দানের সময় আমাদের কী হয়? আমাদের হিসাবটা চলে আসে।

মানে শয়তান তখন আমাদেরকে অর্থসচেতন করে তোলে।

আর অপব্যয়ের সময় যেহেতু শয়তানের ভাই হয়ে যাই আমরা, তখন কিন্তু শয়তান আমাদেরকে সচেতন করে না।

তো আমরা নিজেরা যে-রকম দান করব সে-রকম আত্মীয়স্বজনদেরকেও দানে উৎসাহিত করব

মাটির ব্যাংক বোঝানো অনেক সময় মুশকিল হয়। তাকে এতিম বোঝাবেন। যে, এতিমের দায়িত্ব নেন। প্রত্যেক মাসে এই টাকাটা দেবেন।

আর মাসে দিতে বিরক্ত হয় যে মানে প্রত্যেক মাসে দেব ঠিক আছে একবারে দিতে চান একবারে দিয়ে দেন বছরেরটা। আবার একবছর পরে দেবেন কোনো অসুবিধা নাই।

কিন্তু টেক এ রেসপনসিবিলিটি।

[প্রজ্ঞা জালালি ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © RMGBDNEWS24.COM