ভুটান পর্যটননির্ভর দেশ। অতিথিদের জন্যে সীমানা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটি নিজেদের চিন্তাধারা ও সংস্কৃতি তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে উন্মুখ। দেশটির একপাশে চীন এবং অন্যপাশে ভারত। দুই শক্তিশালী দেশের মাঝখানে অবস্থান হওয়া সত্ত্বেও দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নকেই একমাত্র লক্ষ্য বলে ধরে নেয়নি। ৭ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যার ছোট দেশটি বেছে নিয়েছে একেবারে ভিন্নমাত্রার পথ। গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস (জিএনএইচ) বা জাতীয় সুখ সূচক নিয়ে ভিন্নধর্মী এক উন্নয়নের পথে হেঁটে চলেছে দেশটি।
১৯৭২ সালে ভুটানের রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুক প্রথমবারের মতো ঘোষণা দেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে গেলে নাগরিকের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নইলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে ঠিকই কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে উঠবে মানুষ, বাড়বে মনের অসুখ। সেই অসুখী বৃত্ত ভাঙার লক্ষ্যে দেশটিতে আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে মানুষের সুখ। মানুষের সুস্থ জীবন যাপনের প্রয়োজনে সমষ্টিগতভাবে সুখী হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে জিএনএইচের সার্থকতা ফুটে ওঠে।
এমিনেন্স খেদ্রুপচেন রিনপোচে ভুটানের ত্রংসার সাংচেন ওগেন সুকলাগ বৌদ্ধ মঠের প্রধান। তিনি ২০০৯ সালে ১৯ বছর বয়সে এ পদে নির্বাচিত হন। ভুটানের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ রিনপোচে বা আধ্যাত্মিক মাস্টার তিনি। বর্তমানে তার বয়স ৩১ বছর। জীবনের শেষ ১২ বছর বিশ্বে বৌদ্ধ রীতি ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বদ্ধপরিকর।
বিশ্বের নানা দেশের সংস্কৃতি ও ধর্ম একপাশে রেখে মানুষের প্রতিদিনকার জীবনকে কীভাবে আরও অর্থবহ ও সুখী করে তোলা যায় সে বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। খেদ্রুপচেন জানান, ‘সুখের জন্যে মানুষের হাহাকার নতুন কিছু নয়। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক প্রতিটি মানুষের মূল লক্ষ্য সুখী হওয়া।’
ভুটানের প্রথম বৌদ্ধ অ্যাকাডেমির নির্মাণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সবার মধ্যে বৌদ্ধ দর্শন ছড়িয়ে দিতেই এ অ্যাকাডেমি নির্মিত হচ্ছে। ধর্মবর্ণগোত্র নির্বিশেষে যে কেউ বৌদ্ধ দর্শন সম্পর্কে জানতে এ অ্যাকাডেমিতে আসতে পারবেন।
১৯৭২ সালে প্রথমবারে মতো ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুক ‘স্থূল জাতীয় সুখ’ শব্দটি আলোচনায় আনেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘দেশীয় পণ্যের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জাতীয় সুখ।’ এ ধারণা আলোচনায় আসার পর থেকে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে (এসডিজি) অর্থনৈতিক গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক শান্তির দিকে সমানভাবে গুরুত্ব রাখা দরকার।
তখন থেকেই সুখ ও মানসিক শান্তির বিষয়টি ভুটানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক চিন্তাধারায় প্রভাব রেখেছে। আস্তে আস্তে এ ধারণা লুফে নিয়েছে সারা বিশ্ব। ভুটান সরকার সুখের সূচকের ক্ষেত্রে কিছু জিনিস মাথায় রেখেছে। নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে সুখের বিষয়টি মাথায় রেখে তারা জীবনের সব ক্ষেত্রে মানুষদের সুখী দেখতে চেয়েছে। সরকারি, বেসরকারি ও ব্যবসায়িক সংস্থা সবার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় জাতীয় সুখ সূচকে ক্রমেই ঊর্ধ্বগামী হয়েছে ভুটান।
আর্থসামাজিক অবস্থান নিয়ে মানুষের উদ্বেগ খুবই সাধারণ বিষয়। এ উদ্বেগ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভুটান তার নাগরিদের জীবনযাত্রার মান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানসিক সুস্থতার দিকে নজর রেখেছে। সুখ যেন র্যাংকিং বা প্রতিযোগিতার কোনো বিষয় না হয়। রাষ্ট্রের এ সূচকের মূল লক্ষ্য জনসাধারণের কল্যাণের প্রতি সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখা। জাতীয় সুখ সূচকে নয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে-
মানসিক শান্তি
স্বাস্থ্য
শিক্ষা
সময়ের সুব্যবহার
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সহনশীলতা
সুশাসন
সম্প্রদায়ের জীবনীশক্তি
পরিবেশগত বৈচিত্র্য ও সহনশীলতা
জীবনযাত্রার মান
২০১১ সালে হালনাগাদ করা হয় সূচকের বিষয়বস্তু। সেন্টার ফর ভুটান স্টাডিজের সহায়তা নিয়ে ভুটান সরকার এই ইন্ডেক্স সংশোধন করে। এ সূচকের সহায়তা নিয়ে অসুখী, কম সুখী, বেশ সুখী ও গভীরভবে সুখী এই চার গ্রুপের মানুষকে চিহ্নিত করা যায়। এ বিশ্লেষণের সাহায্যে বোঝা যায় কীভাবে মানুষ সুখ খোঁজে ও উপভোগ করে। একই সঙ্গে কীভাবে অসুখী মানুষের মনে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়েও কাজ করা যায়। মূলত রাষ্ট্র হিসেবে ভুটান তার নাগরিকের প্রতি কতটা আন্তরিক এটি তার উজ্জ্বল প্রমাণ এই সূচক।
২০১১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ভুটান। সেখানে মানুষের সুখ ও সুস্থতার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানানো হয়। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সুখের সম্পর্কের ওপরে আলোচনা করা হয়। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের বৈঠকে সুখ ও সুস্থতাকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়।
বিশ্ব নেতা, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের সবাইকে একত্রিত করার মধ্যদিদিয়ে য়ে একটি নতুন অর্থনৈতিক মডেল প্রস্তাবনা আনা হয়। যে মডেলের আওতায় স্থিতিশীলতা ও সুস্বাস্থ্যের ভিত্তিতে একটি নতুন অর্থনৈতিক ধারার কথা বলা হয়। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ভুটান সরকারের জিএনএইচ সূচকের বিকাশ বৈশ্বিক পর্যায়ে উন্নীত হয়।
পরে নয়টি সূচকের অধীনে মোট ৩৩টি সূচক দিয়ে জিএনএইচ সূচক তৈরি হয়। সেন্টার ফর ভুটান স্টাডিজ আলকায়ার ফস্টার পদ্ধতি ব্যবহার করে এই বহুমাত্রিক সূচক তৈরি করেছে। সংক্ষেপে চারটি স্তম্ভ দিয়ে জিএনএইচ ব্যাখ্যা করা যায় সুশাসন, টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ।
বৌদ্ধ ধর্মে বর্ণিত সুখের ধারণাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়াই ভুটানের উদ্দেশ্য। গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস কমিশন ভুটানে জিএনএইচ বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে এনজিএইচ জরিপ পরিচালিত হয়। এরপর নিয়মিত বিরতিতে ভুটান সরকার এ জরিপ পরিচালনা করে চলেছে।
করোনা মহামারির আগে এই আধ্যাত্মিক মাস্টার তার বক্তৃতা ও কর্মশালার জন্যে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘মহামারিতে আমার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু জগতের প্রতিটি বিষয়ই ভালো ও মন্দ দুদিক থেকে দেখার সুযোগ রয়েছে। মহামারির ফলে বিশ্বভ্রমণ থেমে যাওয়ার বিষয়টিকে আমি ভালোভাবে গ্রহণ করেছি। নিজের অভিজ্ঞতাকে আরও গভীর করে তোলার এ সুযোগ সবসময় আসে না। এ সুযোগে আমি পাহাড়ে গিয়েছিলাম।
সেখানে খুব কম খাবারে দিন কাটিয়েছি। কঠোর আবহাওয়ার মধ্যে গুহায় বাস করেছি। নিজের উপলব্ধিকে আরও আত্মস্থ করার সময় পেয়েছি। আমি বুঝতে পারলাম বাহ্যিক ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত সুখের কোনো সম্পর্ক নেই। সুখের বিষয়টি সহজাত। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি শান্তি খুঁজে পেতে এমন চূড়ান্ত অবস্থায় যাওয়ার কোনো দরকার নেই।
আত্মিক সুখ বাদ দিয়ে জগতের সবখানে সুখের সন্ধান বন্ধ করতে হবে। আমার মতে সুখের চারটি স্তম্ভ রয়েছে। দয়া, সহানুভূতি, অনাসক্তি ও কাজ। এই চারটি স্তম্ভ জীবনের যেকোনো সময়, সেকোনো স্থান থেকে গ্রহণ করা যেতে পারে। এগুলোর মধ্য দিয়ে আপনি সুখী হতে পারেন।’
এই আধ্যাত্মিক মাস্টারের মতে, ‘কেবল ব্যক্তিগত স্তরেই নয়, অন্যদের জন্যেও সুখ সবসময় সৃষ্টির চাবিকাঠি।’ তবে সুখ খোঁজার শুরুতে নিজের প্রতি সদয় হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন তিনি। নিজের প্রতি সদয় থাকলে মানুষ অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠতে পারে। খেদ্রুপচেন জানান, ‘অবশ্যই নিজেকে ভালোবাসতে হবে। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আপনি বিষয়টি সামলাতে সক্ষম এটুকু সত্যিকারভাবে উপলব্ধি করতে হবে। আপনি যথেষ্ট ভালো। সেই সহানুভূতি আপনি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন।’
খেদ্রুপচেনের সঙ্গে তাল মেলান সাবেক ট্যুর গাইড চুনজুর দোজি। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সম্মিলিত সহানুভূতির মধ্য দিয়ে ভুটানের সবাই আত্মিক শান্তি লাভ করবে। চুনজুর বলেন, ‘অন্যদের সাহায্য করার বিষয়ে আমরা উদারনীতিতে বিশ্বাস করি। আমাদের সম্প্রদায়ের কাউকে সাহায্য করার জন্যে আমরা মুখিয়ে থাকি। বৌদ্ধ দর্শনে সাহায্য করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবসময় একে অপরের উপকার করার কথা চিন্তা করি।’
মহামারির সময়ে ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ না করতে পারায় কোনো আক্ষেপ নেই চুনজুরের। এ-সময়টি তার কাছে শেকড়ের কাছে ফিরে আসার সময়। ২০২০ সালের মে মাসে নিজ গ্রাম টেকিজাম্পায় ফিরে আসেন। তিনি জানান, ‘নিরাপদ পেশা বলেই আমি ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করেছি। চাকরি হারানোর বিষয়টি আমার কাছে কঠিন ছিল। বেশ কঠিন সময় পার করেছি। কিন্তু কোনো বিকল্প উপায় ছিল না। গ্রামে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। গ্রামে ফিরে কৃষিকাজে যুক্ত হয়েছি এবং কৃষিপণ্য বিক্রি করেছি।’
নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। সমবয়সী পর্যটকদের কাছে স্থানীয় সংস্কৃতি প্রচারের উপায় হিসেবে তিনি লাল চাল দিয়ে দেশি রান্না বর্ণনা করতেন। তার বর্ণনা শুনে অনেকেই স্থানীয় রান্না শিখতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
বৌদ্ধ দর্শনের মূলে রয়েছে তৃতীয় স্তম্ভ অনিত্যতা। অর্থাৎ হঠাৎ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এ বিষয় নিয়ে খেদ্রুপচেন বলেন, ‘ভুল হয়ে গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে। আমরা যদি মেনে নিই যে, সবকিছুই অস্থায়ী অর্থাৎ সবকিছুই পরিবর্তনশীল। পরিবর্তন সবসময়ই আশাব্যঞ্জক। সাফল্য ও সম্পদ কোনোটিই স্থায়ী নয় যত দ্রুত আপনি তা মেনে নেবেন তত দ্রুতই আপনি সত্য উপলব্ধি করতে পারবেন।’ এই সূত্র কেবল খারাপ পরিস্থিতি নয়, ভালো পরিস্থিতির জন্যও সত্য।
চুনজুর মনে করেন, নিজের প্রতি সদয় ও অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠার মাধ্যমে মহামারি চলাকালীন পরিবর্তনকে স্বাগত জানানোর গুরুত্ব আরও জোরদার করেছে। গ্রামে ফিরে আসার পর তিনি কার্পেন্ট্রি শিখেছেন। প্রতিবেশীর সঙ্গে তাদের বাড়ি মেরামত করার কাজে সাহায্য করেছেন। তিনি জানান, ‘আমরা একটি ঐতিহ্যবাহী ফার্ম হাউজ সংস্কার করেছি। এটিকে খামারে পরিণত করেছি। দীর্ঘদিন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভুটানের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়েছি। দিন শেষে, আমার যা আছে তাতেই আমি খুশি।’
আধ্যাত্মিক গুরু খেদ্রুপচেনের মতে, কর্মকে আমরা যেভাবে বিশ্বাস করতে চাই, কর্ম আসলে তা নয়। তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, ভালো কিছু করলে তার সঙ্গে ভালো কিছু ঘটবে আর খারাপ কাজ করলে তার সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটবে। সর্বজনীন প্রতিশোধ শাস্তির একটি ফর্ম হতে পারে তবে তা মোটেই সত্য নয়।
কারণ অবস্থা ও প্রভাব সম্পর্কে জানলে আপনি এ বিশ্বাস থেকে সরে আসবেন। আপনার ক্রিয়াকলাপ ও পছন্দ আপনার চারপাশের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনি যে গাছের বীজ রোপণ করবেন সে গাছই পাবেন। কর্মে বিশ্বাস করার অর্থ নিজেকে রূপান্তরিত করা, নিজের ভাবনাকে আকার দেওয়া, আপনি কী হতে চান তা নিয়ে মন থেকে কাজ করার সুযোগ।’ দরিদ্র দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভুটান একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। নিজ দেশের নানা সমস্যা স্বীকার করে নেন।
মুদ্রাস্ফীতি ক্রমাগত বেড়েছে, সব জিনিসের দাম বেড়েছে প্রায় ৯%। ৫০% খাদ্য আমদানি করা ভুটানে খাদ্য নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটেছে ফলে খাদ্যে ব্যয় বেড়েছে ১৫%। করোনায় সীমানা বন্ধ করে দেওয়ায় ভুটানের পর্যটননির্ভর অর্থনীতি হোঁচট খেয়েছে। ফলে চুনজুরের মতো অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তবু সুশাসনের ভিত্তিতে জিএনএইচের সূচকে ভুটান হয়ে উঠেছে আরও বেশি নাগরিকবান্ধব। কোভিড-১৯-এর প্রভাব পড়েছে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে।
ভুটান নাগরিকের কর স্থগিত করেছে, দিয়েছে আর্থিক প্রণোদনা। সংসদ সদস্যরা কল্যাণ তাহবিলে এক মাসের বেতন দান করেছেন। সরকার টিকাদান কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বর্তমানে ভুটানের মোট জনসংখ্যার ৯০.২% মানুষ দুই ডোজ কোভিড-১৯ টিকার আওতাভুক্ত।
আধ্যাত্মিক গুরু খেদ্রুপচেন জানান, ‘সবসময় মনে রাখবেন, বর্তমান মুহূর্তে জীবনযাপন করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সুখ কোনো বাহ্যিক কারণের উপজাত নয়। বরং আপনার মনকে ইতিবাচক করে তোলার ফল। সুখ সবার হাতের মুঠোয়।’
সূত্র : দেশ রূপান্তর (১০ অক্টোবর, ২০২১)