যারা আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করে, তারা অনেকটা আশির দশকের প্রেমের মতন অবস্থায় আছে। কি আছে? কয়টা বাড়ি? কোন ব্রান্ডের গাড়ি? কতটা শিক্ষিত? ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড কি?
এসব যাচাই বাছাই করে প্রেম করেনা। নিষ্পাপ মন নিয়ে ভালোবাসে। ভালোবাসে তো বাসেই। বছরের পর বছর অপেক্ষা করে। চাল চূলোহীন এক প্রেমিকের জন্য নিখাঁদ প্রেম নিয়ে দাঁড়ায়ে থাকে যুগের পর যুগ। সাদা মনে কোন কাঁদা নাই। ভেতর যা কিছু আছে তার অধিকাংশই হইলো সরলতা। একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখা যায়- খুব সাধারন জীবন যাপন করা মানুষগুলোর বেশিরভাগই আর্জেন্টিনা সাপোর্টার।
অন্যদিকে ব্রাজিল সাপোর্টাররা অনেক আগায়ে গেছে। আধুনিক প্রেমের মতন অবস্থায় আছে। ছেলের সম্পদ কেমন? নিজের বয়স ৩২ হয়নাই, তবে তার বাপ দাদারা ৩২ বছরে কয়টা বাড়ি করছে, কয়টা গাড়ি ছিল, কোন স্কুলে পড়ছে, এসব দেইখা ছেলের কাছে বিয়া বসার জন্য প্রস্তুত হয়। দোষ তাদেরও না। সবাই সিকিউরড লাইফ খোঁজে। যেইখানে বিলাসিতা অর্জনের সহজ পথ থাকে, এখনকার ছেলে মেয়েরা সেই সেইফ জোনের দিকেই আগ্রহী হয়। তারা জানেনা, নিখাঁদ প্রেম কি জিনিস? অপেক্ষার ভেতর কতটা আনন্দ থাকে। একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখা যায়- দুনিয়ার যত কুটিল, জটিল ও শক্ত মনের মানুষ আছে, তাদের বেশিরভাগই ব্রাজিল সাপোর্টার। এদের ভেতর সরলতা কম। এরা প্রাকটিক্যাল জীবন যাপনে বিশ্বাস করে।
আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের খেলা শুধু খেলাই না, এইটা হইলো মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের ভেতরের যুদ্ধ। সরলতার সাথে কুটিলতার যুদ্ধ। প্রেম ও বিলাসিতার যুদ্ধ। সাধারন ও অসাধারনের যুদ্ধ। সিকিউরড লাইফ ও ইনসিকিউরড লাইফের দিকে ঝুকে যাওয়া দুই দল মানুষের আভ্যন্তরীণ যুদ্ধ।