রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করা ভালো। রোগ হলে রোগীর কষ্ট, চিকিৎসা, ওষুধ ইত্যাদিতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। মানুষের সবচেয়ে প্রিয় হলো তার জীবন। তাই সবার হৃদয় জুড়ে থাকে বেঁচে থাকার বাসনা।
খাদ্য ছাড়া জীবনের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। এ বিশ^চরাচরে খাদ্য ছাড়া বাঁচতে পারে এমন কোন জীব নেই। প্রতিটি জীবের জন্য চাই খাদ্য। তাই মানুষ স্বভাবগত নতুন বিষয়ে আগ্রহী থাকে। নতুনত্ব নিয়ে আসতে চায় সব ক্ষেত্রে।
তাই খাদ্যের নতুন ও আকর্ষনীয় ভাব মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। জিহ্বার স্বাদ যে অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়, সেটা আমাদের অনেকেরই জানা। তাই আসুন, জেনে নেই ফাস্টফুডের ক্ষতিকর দিক।
গত কয়েক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাশ্চাত্যে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে চলেছে খাদ্য-সংশ্লিষ্ট রোগের প্রকোপ। বিস্তার ঘটেছে জানা-অজানা খাদ্যবাহিত জীবাণুর।
মাত্রাতিরিক্ত ওজনের হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। স্থুলতা থেকে উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে ব্যয় হচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসবের নেপথ্যে রয়েছে রসনা তৃপ্তিদায়ক ফাস্টফুড-এর উত্থান।
বিশ্বজুড়ে যার আরেক নাম ‘জাংক ফুড’।
যুক্তরাষ্ট্রে দিনে প্রায় দুই লাখ মানুষ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। সে দেশের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর হিসাব মতে, প্রতিবছর এক-চতুর্থাংশেরও বেশি আমেরিকান ফুড পয়জনিং-এর শিকার হন, যার অধিকাংশই কর্তৃপক্ষের গোচরে আসে না এবং যথাযথভাবে রোগনির্ণয়ও হয় না প্রায়শই।
দু-একটা যা-ও হয়, সেটি প্রকৃত সংখ্যার নগণ্য অংশ মাত্র।
গত কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য-সংশ্লিষ্ট রোগের প্রকোপই শুধু বাড়ে নি, এ রোগগুলো শরীরে মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিও করছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার প্রাথমিক অবস্থায় ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া দেখা দেয় কিন্তু চরম পর্যায়ে এটি গুরুতর সংক্রামক ব্যাধিও ডেকে আনতে পারে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক খাদ্যবাহিত জীবাণু হৃদরোগ, কিডনি-বৈকল্য, স্নায়বিক জটিলতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করাসহ নানারকম দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
পুরো বিষয়টি আমাদের জন্যেও বয়ে আনছে সতর্কবার্তা। কারণ, পশ্চিমা ফাস্টফুড সংস্কৃতি এখন দেশের শুধু উচ্চবিত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, দ্রুত গতিতে এর বিস্তার ঘটেছে পুরো সমাজেই।