আরেকটা ঘটনা। এটা কাতারের ঘটনা। এক ধনাঢ্য পরিবার মহিলা। মহিলা ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডাক্তার ফাইনাল দিয়ে দিয়েছেন যে, একবারে যত চিকিৎসা করো, ছয় মাস।
ধনাঢ্য মহিলা! ঘরে কাজের লোকের অভাব নাই। বেশ কয়েকজন কাজের লোক।
তো এক কাজের মহিলা নতুন এসছে, তাকে খুব যত্ন করছে। কয়েকদিন হলো মাত্র এসছে। খুব যত্ন করছে। কিন্তু মহিলা প্রচণ্ড অস্থিরতায় ভুগছে। কী যেন! আবার কিছু বলছেও না। কাজকর্ম খুব মনোযোগ দিয়ে করছে খুব যত্ন করছে যা যা করার করছে।
কিন্তু এই মহিলা যার যত্ন করছেন যে রোগী তিনি বুঝতে পারছেন যে, মহিলা সাংঘাতিক কোনো অস্থিরতা এবং কষ্টের মধ্যে রয়েছে। দুই মহিলার কোনো মহিলাই কোনো মহিলার ভাষা বোঝে না। সে আরবি বোঝে আর যে মহিলা সে বাংলা। সে আরবি বোঝে না। কিন্তু যত্নের তো আর ভাষা লাগে না। যত্ন করার জন্যে ভাষার প্রয়োজন নাই।
তো যখন সে মহিলা বুঝতে পারলেন… আরেকজন মহিলার মাধ্যমে যে, এই মহিলা দেড় মাসের শিশু বাচ্চাকে রেখে ওখানে চলে আসছে। দুধের বাচ্চাকে রেখে এবং স্বাভাবিক বাঙালি মা-তো… তার অস্থিরতা সেরকম।
যখন ঐ রোগী মহিলা বুঝতে পারলেন যে, এই মহিলা দেড় মাসের বাচ্চাকে রেখে চলে এসছেন তখন তিনি তাকে ছুটি দিয়ে দিলেন দেড় বছরের বেতনসহ যে ঠিক আছে, তুমি যাও, তোমার বাচ্চাকে বড় করো। এই নাও পুরো বেতন। তোমার কাজ থাকবে। দেড় বছর পরে তুমি বাচ্চাকে বাচ্চা যখন একটু বড় হয় তারপরে তুমি আসবে। আর তুমি আমার জন্যে দোয়া করবে।
সাধারণভাবে আরবীয়রা আসলে মানবিক আচরণ খুব কম করে। কিন্তু এই মহিলা তাকে ছুটি দিয়ে দিলেন। মহিলা চলে এলো।
যে মহিলা, রোগী মহিলা বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না, যাকে বলা হয়েছিল আয়ু মাত্র ছয় মাস। সে মহিলা বিছানা থেকে উঠতে শুরু করলেন এবং ছ’মাসের মাথায় হাঁটা চলাফেরা সব শুরু করছেন। এবং এক বছরের মাথায় ডাক্তার তাকে ক্যান্সার ফ্রি ডিক্লেয়ার করল এবং দেড় বছর পর এই মহিলাকে বিমানের টিকেটও দিয়ে দিয়েছিলেন আবার যখন আসবে তখন যাতে তুমি আসতে পারো। দেড় বছর পর যখন এই কাজের মহিলা সেখানে গেল… গিয়ে দেখে যে, বেগম সাহেব দিব্যি সেজেগুজে সবকিছু করছেন।
এবং ডাক্তার তার রোগমুক্তি দেখে বিস্মিত হলো। বলে যে, মেডিকেল সায়েন্সে এটার কোনো উদাহরণ নাই! এটা সম্ভব না।
কিন্তু কীভাবে হলো? তখন মহিলা বলল যে, কীভাবে হলো বুঝতে পারব না। কিন্তু আমি একটা মাকে তার বাচ্চার কাছে, দুগ্ধপোষ্য বাচ্চার কাছে… আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম এটুকুই বুঝি। হয়তো আল্লাহ এজন্যে দয়া করেছেন।
ডাক্তার বলল যে, আল্লাহর দয়া ছাড়া, আল্লাহর রহমত ছাড়া এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না।