এই যে অন্যের কল্যাণ… কেন? অন্যের যত কল্যাণ করবেন, আপনার তত কল্যাণ হবে। এবং অন্যের যত ক্ষতি করবেন আপনার তত ক্ষতি হবে।
একজন আত্মউন্নয়ন বিশেষজ্ঞ। তিনি এক শহর থেকে আরেক শহরে যাবেন। আমেরিকার ঘটনা এটি।
যে-কোনো কারণে হোক জ্যামে পড়ে গেছেন। একদম শেষ মুহূর্তে যখন উনি বিমানে ঢুকতে গিয়ে গ্যাংওয়ে পর্যন্ত গিয়েছেন, তখন দরজা বন্ধ হয়ে গেছে।
ওখানে যে কর্তব্যরত ব্যক্তিটি ছিলেন তিনি প্রথম তাকে খুব রিকোয়েস্ট করলেন। রিকোয়েস্টে যখন কাজ হলো না তারপরে যেটা হয় যে রিকোয়েস্ট করার পরে আমরা কী করি? যখন কাজ হয় না তখন বকাবকি করি।
খুব বকাবকি করলেন। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। এটা বন্ধ তো বন্ধই।
এবং উনি নিজের চোখের সামনে দেখলেন যে বিমানটা রানওয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। রানওয়ে থেকে বিমান উড়ছে। মনের দুঃখে রাগে-ক্ষোভে তিনি টিকেট কাউন্টারে গেলেন। টিকেট ফেরত দিয়ে টাকা নেয়ার জন্যে।
কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছেন আর ক্ষোভে মানে গজরাচ্ছেন। এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই তার পালা আসার আগেই একটা প্রচণ্ড আওয়াজ পেলেন। বিস্ফোরণের শব্দ!
এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পেলেন- যে বিমানে ওনার ওঠার কথা ছিল, যে বিমানে ওঠার জন্যে উনি এত চেষ্টা করেছেন… রিকোয়েস্ট থেকে তারপরে ঝগড়া। সে বিমানটা রানওয়ে থেকে ওঠার সময়ই একটা ইঞ্জিন আউট হয়ে যায় এবং কন্ট্রোল ফেল করে এবং বিমান বিধ্বস্ত হয়। পাইলট, ক্রু থেকে শুরু করে সব যাত্রী নিহত হন। মারা যান। কেউ বাঁচেন নি। উনিই একমাত্র উঠতে পারেন নি বলে বেঁচে গেছেন।
কেন? কারণ যে কাজটা উনি করতেন… আত্মউন্নয়নের কাজ, অন্যের আত্মিক উন্নয়নের কাজ, অন্যের মানসিক উন্নয়নের কাজ, অন্যের মনোবল উন্নয়নের কাজ, অন্যের কল্যাণের কাজ প্রকৃতি তাকে প্রতিদান দিয়েছে। আল্লাহ তাকে প্রতিদান দিয়েছেন।
এবং তিনি বিমানের টিকেটটা আর ফেরত দেন নাই। টাকাও তোলেন নাই। ঐ টিকেটটা যত্ন করে রেখে দিয়েছেন এবং মাঝে মাঝেই স্মরণ করেন দেখেন। উনিও সে-সময় যদি আর দুই মিনিট আগে পৌঁছতে পারতেন তাহলে বিমানে উঠতেন এবং উনিও লাশ হয়ে যেতেন। জীবন ওনার কাছ থেকে চলে যেত। জীবন ওনার কাছে থাকত না। জীবন থেকে তিনি বঞ্চিত হতেন।
আমরা আসলে যখন অন্যের কল্যাণ করি… এই কল্যাণটা সবসময় জমা থাকে। যখন আপনার প্রয়োজন তখন এমন মানুষ আপনাকে সহযোগিতা করবে, এমন মানুষ আপনার সাহায্য করবে যেটা আপনি তাকে আগেও দেখেন নাই, পরেও দেখেন নাই।