1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসে নভেম্বর ৩ শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার দীনেশচন্দ্র সেন রায়বাহাদুর জন্মগ্রহণ করেন।জন্ম গ্রহণ করেন

  • সময় বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১
  • ৮০০ বার দেখা হয়েছে

শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার দীনেশচন্দ্র সেন রায়বাহাদুর জন্মগ্রহণ করেন।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩০৭তম (অধিবর্ষে ৩০৮তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৮৩৮ : ভারতে বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৭৫ : বাংলাদেশের চার জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়।
২০২০ : ৫৯তম মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

জন্ম

১৮৬৬ : দীনেশচন্দ্র সেন, লোকসাহিত্য বিশারদ ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার।
১৯১৯ : অরবিন্দ পোদ্দার, বাঙালি লেখক, অধ্যাপক ও গবেষক।
১৯৩৩ : অমর্ত্য সেন, নোবেলবিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ।
১৯৭৩ : মৌসুমী, বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রী।

মৃত্যু

১৯৭৫ : তাজউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা,
           সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ,
           মো. মনসুর আলী, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী,
           আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বাংলাদেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা।
১৯৭৭ : বাংলাদেশি রসায়নবিদ, গ্রন্থকার এবং শিক্ষাবিদ মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা
২০১৭ : বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস

দিবস

জেল হত্যা দিবস (বাংলাদেশ) ৷

দীনেশচন্দ্র সেন

দীনেশচন্দ্র সেন (রায়বাহাদুর) ছিলেন শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার।

জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৬ সালের ৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরি গ্রামে মাতুলালয়ে। তার পৈতৃক নিবাস ঢাকা জেলার সুয়াপুর। বাবা ঈশ্বরচন্দ্র সেন মানিকগঞ্জ আদালতের উকিল ছিলেন। মায়ের নাম রূপলতা দেবী।

জগন্নাথ স্কুল থেকে এনট্রান্স, ঢাকা কলেজ থেকে এফ.এ পাস করেন ১৮৮৫ সালে। এ সময় বাবা-মায়ের মৃত্যুর কারণে তিনি বহিরাগত ছাত্র হিসেবে পরীক্ষা দিয়ে ১৮৮৯ সালে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন শুরু সিলেটের হবিগঞ্জ স্কুলে। এরপর তিনি কুমিল্লার শম্ভুনাথ ইনস্টিটিউশন ও ভিক্টোরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদান করেন।

গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে ঘুরে তিনি প্রাচীন বাংলার পুঁথি সংগ্রহ করেন এবং সেসব উপকরণের সাহায্যে ১৮৯৬-এ ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ শিরোনামে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা করেন। ১৯০৫ সালে বিনোদবিহারী কাব্যতীর্থের সহযোগিতায় শ্রীকর নন্দীর লেখা ‘ছুটিখানের মহাভারত’-এর পুঁথি এবং হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সহায়তায় মানিক গাঙ্গুলীর লেখা ‘শ্রীধর্মমঙ্গল’ পুঁথি দুটি দীনেশচন্দ্র সেন প্রথম প্রকাশ করেন।

১৯১১ সালে তার সুবিখ্যাত গ্রন্থ ‘হিস্ট্রি অব বেঙ্গলি লিটেরেচার’ প্রকাশিত হলে তা সর্বমহলের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। ১৯২৬ সালে মৈমনসিংহ গীতিকা গ্রন্থটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। শ্রী দীনেশচন্দ্র সেন রচিত গবেষণাধর্মী ‘বৃহৎবঙ্গ’ গ্রন্থটি বাঙালির ইতিহাস চর্চায় অনন্য।

বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতি তার গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসার ফল বৃহৎবঙ্গ। এটি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস। ঘরের কথা ও যুগসাহিত্য গ্রন্থটি দীনেশচন্দ্র সেনের আত্মজীবনী। বাংলা জীবনী সাহিত্যের ইতিহাসে তার এ গ্রন্থের মূল্য স্বীকার্য। তিনি এ গ্রন্থে নিজের বেড়ে ওঠা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতসহ তার সাহিত্যিক জীবনের কথা অত্যন্ত সরল ও মনোহর ভাষায় বিবৃত করেন।

১৯১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘রামতনু লাহিড়ী রিসার্চ ফেলোসিপ’ প্রদান করে এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মৈমনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা সম্পাদনা করেন।

সৃজনশীল লেখক হিসেবেও দীনেশচন্দ্র সেন পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলা সাহিত্য বিষয়ে গবেষণামূলক ও ইতিহাসধর্মী গ্রন্থ প্রণয়ন, পৌরাণিক আখ্যান রচনা, লোকসাহিত্য সম্পাদনা ও বাঙালির ইতিহাস প্রণয়নের পাশাপাশি তিনি রচনা করেন কবিতা, উপন্যাস ও গল্প। উল্লেখযোগ্য অন্যান্য গ্রন্থগুলো হলো:

বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (১ম ও ২য় খণ্ড), তিন বন্ধু, রামায়ণী কথা, বেহুলা, সতী, ফুল্লরা, জড় ভরত, সুকথা, গৃহশ্রী, নীলমানিক, মুক্তা চুরি, সরল বাংলা সাহিত্য, বৈদিক ভারত, ঘরের কথা ও যুগসাহিত্য, আলোকে আঁধারে, চৌকির বিড়ম্বনা, ওপারের আলো, পৌরাণিকী, বৃহৎ বঙ্গ (১ম ও ২য় খণ্ড), আশুতোষ স্মৃতি কথা, শ্যামল ও কাজল, পদাবলী মাধুর্য্য, পুরাতনী, বাংলার পুরনারী, প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান, হিন্দু সমাজ ও বৈষ্ণব ধর্ম, মৈমনসিংহ গীতিকা ইত্যাদি।

সাহিত্য ও গবেষণায় অবদানের জন্যে দীনেশচন্দ্র সেন ১৯২১ সালে ভারত সরকার কর্তৃক ‘রায়বাহাদুর’ উপাধি পান। একই সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিলিট ডিগ্রি প্রদান করে এবং ১৯৩১ সালে তিনি জগত্তারিণী স্বর্ণপদক লাভ করেন।

১৯৩৯ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বেহালায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com