1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০৭ অপরাহ্ন

ইতিহাসে সেপ্টেম্বর ১৫ -নিতুন কুণ্ডু চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্প-উদ্যোক্তা মৃত্যুবরণ করেন

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১১৫৩ বার দেখা হয়েছে

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৫৮তম (অধিবর্ষে ২৫৯তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৯৫৯ : দূরদর্শন (সংক্ষেপে ডিডি) ভারতে প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয়।
১৯৭৩ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মিশর ও সিরিয়া।

জন্ম

১২৫৪ : মার্কো পোলো, ইতালির ভেনিস অঞ্চলের একজন ব্যবসায়ী ও বিখ্যাত পরিব্রাজক।
১৭৮৯ : জেমস ফেনিমোর কুপার, The Last of the Mohicans খ্যাত কথাসাহিত্যিক।
১৮৫৭ : উইলিয়াম হাওয়ার্ড ট্যাফট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৭তম রাষ্ট্রপতি।
১৮৬০ : ভারতরত্ন এম বিশ্বেশ্বরাইয়া, ভারতের প্রখ্যাত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, দক্ষ প্রশাসক ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতা।
১৮৭৬ : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক।
১৮৯০ : আগাথা ক্রিস্টি, ‘দ্য কুইন অব ক্রাইম’ ডাকনামে পরিচিত ইংরেজ অপরাধ কল্পকাহিনী লেখক।

মৃত্যু

১৮৫৯ : ইংরেজ প্রকৌশলী ও গ্রেট পশ্চিম রেলওয়ে ডিজাইনার ইসামবারড কিংডম ব্রুনেল
১৯৮৯ : আমেরিকান কবি, লেখক ও সমালোচক রবার্ট পেন ওয়ারেন
২০০৬ : বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী ও সফল উদ্যোক্তা নিতুন কুণ্ডু

দিবস

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস।

চিত্রশিল্পী নিতুন কুন্ডু

নিতুন কুন্ডু ছিলেন একজন বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী, নকশাবিদ, ভাস্কর, মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্প-উদ্যোক্তা। পুরো নাম শ্রী নিত্য গোপাল কুন্ডু। তিনি সাবাশ বাংলাদেশ, সার্ক ফোয়ারা প্রমুখ বিখ্যাত ভাস্কর্যের স্থপতি। তিনি আসবাবপত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অটবি স্থাপন করেন ও সফলতা লাভ করেন। বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালের ৩ ডিসেম্বর দিনাজপুরে। বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুন্ডু, মায়ের নাম বীণাপাণি কুন্ডু। লেখাপড়ায় হাতেখড়ি ১৯৪২ সালে বড়বন্দর পাঠশালায়। ১৯৪৭ সালে ভর্তি হন দিনাজপুর শহরের গিরিজানাথ হাইস্কুলে। ১৯৫২ সালে তিনি মেট্রিকুলেশন পাস করেন।

পড়ালেখা করেন তদানীন্তন ঢাকা আর্ট কলেজে (বর্তমানের চারুকলা ইনস্টিটিউট)। সেখান থেকে তিনি ১৯৫৯ সালে চিত্রকলায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান ও মরমি শিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদের প্রিয় ছাত্র ছিলেন।

নিতুন কুন্ডু ঢাকাস্থ মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে যোগ দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের অধীনে তথ্য ও প্রচার বিভাগে ডিজাইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তার আঁকা একটি পোস্টারের স্লোগান ছিল: ‘সদাজাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী’।

স্বাধীনতার পরে চাকরি না করে নিতুন কুন্ডু স্বাধীনভাবে সৃজনশীল কর্মে নিজেকে নিয়োজিত করেন। সে লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালে গড়ে তোলেন ‘অটবি’ নামে এমন একটি প্রতিষ্ঠান; যা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। এ প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালির রুচিবোধ উন্নত করার চেষ্টা করেন।

একজন সৃজনশীল চিত্রশিল্পী হিসেবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে কয়েকটি একক চিত্র প্রদর্শনী হয়। এছাড়া ১৯৫৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে বহু উল্লেখযোগ্য যৌথ প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নিয়েছেন।

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ শিল্পী তেলরঙ, জলরঙ, অ্যাক্রিলিক, এচিং, সেরিগ্রাফ, পেনসিল বা কালিকলম মাধ্যমে চিত্র রচনা করেন। প্রথম দিকে অবয়বধর্মী কাজ করলেও পরবর্তীকালে তিনি ঝোঁকেন বিমূর্ত ছবির দিকে। এছাড়া তিনি নির্মাণ করেন ভাস্কর্য ‘মা ও শিশু’, ১৯৭৫; স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মারক ‘সাবাস বাংলাদেশ’, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯২ এবং ঐতিহ্যবাহী নৌকার প্রতীক ‘সাম্পান’, চট্টগ্রাম বিমান বন্দর, ২০০১), ফোয়ারা (‘কদমফুল’, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কদ্বীপ, ঢাকা, আশির দশক; ‘সার্ক ফোয়ারা’, সোনারগাঁ সড়কদ্বীপ, ঢাকা, ১৯৯৩) ও ম্যুরাল (ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল, ১৯৬৬-৬৭; হোটেল শেরাটন ও গুলশান জনতা ব্যাংক)।

জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন পুরস্কার ও পদকের ট্রফি, ক্রেস্ট, মেডেল প্রভৃতির নকশাকার তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ, এশিয়া কাপ ক্রিকেট পুরস্কার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নতুন কুঁড়ি পুরস্কার, আন্তর্জাতিক শিল্পমেলা ট্রফি, প্রেসিডেন্ট শিশুকিশোর ফুটবল কাপ প্রভৃতি। প্যাভিলিয়ন ও তোরণ নির্মাণ, মঞ্চসজ্জা, আলোকসজ্জা, নানা স্মরণিকার প্রচ্ছদ ও পোস্টার অঙ্কন, লোগো তৈরি প্রভৃতিতেও তার পারদর্শিতা উল্লেখযোগ্য। বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর পাওয়া যায় তার প্রকৌশলভাবনায়, মেশিনের যন্ত্রাংশ কিংবা নাট-বল্টু তৈরিতে, নতুন মেশিনের পরিকল্পনায় কিংবা লিফট নির্মাণে।

চিত্রশিল্পী ও শিল্পপতি হিসেবে বিশেষ অবদানের জন্যে তিনি লাভ করেন জাতীয় চিত্রকলা পুরস্কার (১৯৬৫), চিত্রকলায় স্বর্ণপদক (মোবাইল প্রদর্শনী: ১৯৬৮), ঢাকা বাণিজ্য মেলায় প্যাভিলিয়ন নকশার জন্যে বহুবার তিনি প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ লাভ করেন ১৯৯৭ সালে। ডেইলি স্টার-ডিএইচএল শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা পদকসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন।

নিতুন কুণ্ডু ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর পোস্তগোলা শ্মশানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।

সূত্র : সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com