1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

ইনজেকশনের ক্যানুলা, এমনকি ডায়াপারও খোলা হয় নি মৃতার শরীর থেকে!

  • সময় রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১
  • ৯৫৭ বার দেখা হয়েছে
ভদ্রমহিলার বয়স ৬১ বছর। কোভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যুবরণ করেছেন রাজধানীর একটি হাসপাতালে। খবর পেয়ে কোয়ান্টাম দাফন টিমের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছান। হাসপাতালে ছিলেন ভদ্রমহিলার দুই ছেলে।
তারা স্বাভাবিকভাবে ব্যস্ত ছিলেন হাসপাতালের বিল পরিশোধ এবং ডেথ সার্টিফিকেট নিতে। মায়ের লাশ ছিল কেবিনে।
স্বেচ্ছাসেবীরা হাসপাতালে পৌঁছার পর লাশ চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দিতে বললেন ভদ্রমহিলার ছেলেদের। তখন দেখা গেল একটি অদ্ভুত দৃশ্য। মায়ের লাশ এনে বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছেন না সহোদর দুই ভাই!
বড় ভাই বলছেন ছোট ভাইকে—’তুমি যাও।’ ছোট ভাই বলছেন বড় ভাইকে—’তুমি যাও, মায়ের লাশ এনে দাও।’ বড় ভাই বলছেন—’আমি যেতে পারব না।’ ছোট ভাই বলছেন—’আমি যেতে পারব না।’ এভাবে চলল বেশ কিছুক্ষণ।
তাদের অবস্থা দেখা ছাড়া স্বেচ্ছাসেবীদের আর কী করার আছে তখন? আহা! যে মায়ের ঋণশোধ করা সন্তানের পক্ষে সম্ভব নয়, সে মায়ের লাশটা শুধু এনে দেবে—এটুকু দায়িত্ব পালনে কত অনাগ্রহ! অবশেষে মায়ের লাশ এনে দিতে গেল ভীত সন্ত্রস্ত ছোট ভাই ।
মহিলার মৃতদেহ যেমন লম্বা তেমনি চওড়া। হাসপাতালের স্ট্রেচারও ছোট মনে হচ্ছিল সেই দেহের জন্যে। মহিলার পা ছিল স্ট্রেচারের বাইরে। যা-হোক, লাশ আগেই পরিষ্কার কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে টেপ লাগানো ছিল। মনে হচ্ছিল যেন দাফনের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে মৃতদেহ।
কিন্তু টেপ খোলার পর দেখা গেল, মৃত মহিলাটির হাতে ইনজেকশনের ক্যানুলাও রয়ে গেছে, এমনকি কয়েকদিন আগের ডায়াপারও খোলা হয় নি!
দাফন টিমের মহিলা স্বেচ্ছাসেবীরা হাসপাতালেই তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন অনেক কষ্টে। কারণ লাশ এত ভারী ছিল যে, স্বেচ্ছাসেবীদের পক্ষে বাস্তবিকই বেশ কঠিন ছিল গোসল দেয়ার কাজটি।
এর মধ্যে মৃতার ছেলে বার বার বলছিলেন, তার মায়ের নাকে যে হীরার নাকফুলটি আছে সেটি যেন খুলে তাদের হাতে দেয়া হয়! অবশ্য স্বেচ্ছাসেবীরা অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সেই নাকফুল খুলতে পারেন নি।
ওযু-গোসল শেষে তাকে আতর সুরমা দিয়ে সাজিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হলো। তারপর লাশ বডি ব্যাগে ঢুকিয়ে প্যাকেট করার পর মৃতার ছেলেদেরকেও জীবাণুনাশক স্প্রে করা হলো।
হাসপাতালেই জানাজা এবং দোয়া হয় মৃতার জন্যে। তখন অবশ্য ছেলেরাও অংশগ্রহণ করেছেন দোয়ায়। সবশেষে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ তুলে দেন স্বেচ্ছাসেবীরা। ছেলেরা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে লাশ দাফন করবেন তাদের মায়ের।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com