আপনার অবকাঠামোর একটা পরিমিতি আছে। আপনার যে স্টমাক এই স্টমাকের সাইজ বলে দেবে যে আপনি কী পরিমাণ খাবেন! এবং কী পরিমাণ খাওয়া আপনার উচিৎ!
ধরেন একজনের অবকাঠামো হচ্ছে চিকন। যেমন আমার অবকাঠামো হচ্ছে স্লিম অবকাঠামো।
আমি যদি বেশি খাই তো কী হবে? আমার তো বডি স্ট্রাকচার তো বাড়বে না। কী বাড়বে? শুধু মেদ বাড়বে।
এটা নিয়ে একটা গল্প আছে। এক মহিষ পানি খাওয়ার জন্যে ডোবাতে যায়। আর ডোবা হচ্ছে মহিষের খুব প্রিয় জায়গা। কারণ মহিষের শরীরে গরম বেশি। যে কারণে দেখবেন মহিষের দুধ বেশি হয়। এবং মহিষের দুধ হচ্ছে ঘন।
এবং মহিষের দুধের যে দই, এই দই হচ্ছে অত্যন্ত ঘন দই, ক্রিমযুক্ত দই। এবং যারা মহিষের দুধের দই দু’চারবার খেয়েছেন তারা নরমাল গরুর দুধের দই আর পছন্দ করেন না।
তো এক মহিষ ডোবাতে ডুবে আছে। মহিষের বডি তো এই রকম। এক ব্যাঙ ওখানে থাকে। ব্যাঙের সাথে প্রথমে মহিষের খাতির ছিল। পরে দুজনের ঝগড়া হলো।
ঝগড়া হওয়ার পরে ব্যাঙ প্রথমবার অনুভব করল যে, মহিষ তার চেয়ে শক্ত বেশি, তার চেয়ে বডি তার বড়।
সে শুধু ফোঁসফোঁস করে কিন্তু কিছু করার শক্তি তার নাই।
আরেক ব্যাঙ পরামর্শ দিল যে তুই ভালো করে খা। তাহলে তুইও মহিষের মতো হতে পারবি। এবং তখন মহিষকে আচ্ছামতো মার দিতে পারবি।
অন্যের বুদ্ধিতে ব্যাঙটি খুব খাওয়া শুরু করল। যেরকম আমরা আজকাল খাবার-দাবার কী খাই? মিডিয়াতে যা বিজ্ঞাপন দেখি সেটা খাই। চিপস খাই। চিপস তো এখন না খেলে চলেই না। চিপস খাই, চকলেট খাই।
তো ব্যাঙটি খুব মোটা হওয়া শুরু করল। খাচ্ছে এবং সে ফিল করছে যে আগের চেয়ে সে একটু মোটাসোটা হয়েছে।
সে বার বার মহিষের সামনে যায়। আর তাকিয়ে দেখে যে, তার চেয়ে মহিষ অনেক বড়। এখনো ঝাঁপ দেয়ার মতন অবস্থা হয় নাই।
আরো খাওয়া শুরু করল। খেতে খেতে খেতে খেতে এখন সে আর নড়াচড়াই করতে পারে না। কারণ তার শরীরে মেদ এত বেড়ে গেল, এতো ফেঁপে গেল, ফুলে গেল যে সে আর নড়াচড়া করতে পারে না।
আগে তো ফোঁসফোঁস করতে পারত, এখন তাও করতে পারে না।
শুধু হাসফাস করে। কোনোরকম দম নেয়, দম ছাড়ে। এবং মরেই গেল।
তো খাবার ব্যবসায়ীদের কাজ কী? আপনাকে বেশি বেশি খাওয়ানো। এবং তাদের বুদ্ধি দেখেন, কৌশল দেখেন! বুফে সিস্টেম! মানে ৯০ পদ!
যত পারো তত খাও। কোনো অতিরিক্ত পয়সা লাগবে না। বুফে খাবারের এটা কিন্তু চমৎকার বুদ্ধি। খাও খাও খাও খাও।
এবং এই খাবার কোম্পানি, যত হোটেলওয়ালা তাদের মালিকদের আবার শেয়ার ক্লিনিকে আছে।
কারণ যত খাবে তত কী হবে? যখন অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাবে। তখন তার অসুখ হবে। অসুখ হলে আবার ক্লিনিকে যেতে হবে।
এবং আপনি ওষুধ কোম্পানিগুলোর খোঁজ নেন। সব রসুনের গোড়া এক। তেমনি সব মালিকের গোড়া এক।
অতএব বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রভাবিত হবেন না। অবশ্য বিজ্ঞাপন উল্টা।
খাবারের বিজ্ঞাপন প্রথম দেয়। তারপরে ডায়েটিংয়ের বিজ্ঞাপন দেয়। বলে, ডায়েট করো এই করো এই করো। রাতারাতি স্লিম হয়ে যাও।
কিন্তু মনে রাখবেন, রাতারাতি ফোলাও যায় না। রাতারাতি স্লিমও হওয়া যায় না।
স্লিম হওয়ারও প্রসেস আছে। আর ওজন কমানোরও প্রসেস আছে। সিস্টেম আছে।
স্বাস্থ্য, বিশেষত ফিগার ঠিক রাখতে আপনাকে যত্ন নিতে হবে। এবং তা হতে হবে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন।
বোখারী শরীফের হাদিসে কী বলা হয়েছে? বলা হয়েছে যে, সেই আমল হচ্ছে সর্বোত্তম যা নিয়মিত করা হয়। অল্প হোক, কিন্তু নিয়মিত।
এই যে অল্প এবং নিয়মিত, নিয়মিত করা এবং অল্প করা এই দুটোর যে শক্তি, নিয়মিত অল্প কাজ এটার যে শক্তি তা আমরা অধিকাংশ মানুষ বুঝি না। আমরা বিপ্লব করে ফেলতে চাই।
আসলে রাতারাতি কিছু হয় না। আর রাতারাতি যদি কিছু হয় সেটা টেকে না। সেটা ধ্বসে যায়।
একটা জিনিস উঠতে যত সময় লাগে, পড়তেও ততই সময় লাগে। একটা ফানুস দৃশ্যমান হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। হাওয়াই বাতি দৃশ্যমান হয় মুহূর্তের মধ্যে। থাকে কতক্ষণ? মুহূর্তমাত্র।
তো এইজন্যে খাবারের যে ফরমুলা কোয়ান্টাম মেথডে আমরা বলেছি, এই ফরমুলাটাকে ফলো করবেন। এর চেয়ে বেটার ফরমুলা এর চেয়ে ভালো ফরমুলা যদি থাকত আমি সেটা অনুসরণ করতাম।