সেপ্টেম্বর মাসে মিডিয়ার আলোচনার একটা প্রধান বিষয় ছিল ই-কমার্সের নামে প্রতারণা। লক্ষ লক্ষ মানুষ কীভাবে প্রতারিত হয়েছে তার হরেকরকম কাহিনী বিচিত্র কাহিনী উঠে এসেছে মিডিয়ার পাতায় মিডিয়ার বক্তব্যে।
আমরা বার বার সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছি যে ভার্চুয়াল ভাইরাস ভার্চুয়াল প্রতারণা ডিজিটাল প্রতারণা যে কত বহুরূপী হতে পারে চোখ কান খোলা না রাখলে আপনি নিজেও তার খুব নির্মম শিকার হতে পারেন।
ইভ্যালি নিয়ে এখন অনেকেই সরব। কিন্তু আমরা প্রথম থেকেই তার পণ্য কিনলে ১০০% ক্যাশব্যাক ১৫০% ক্যাশব্যাক এ কথা যখন প্রথম শুনেছি আমরা ঘরোয়াভাবে আমাদের পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করে দিয়েছি।
আমরা প্রথম আমাদের সাদাকায়নের আলোচনায় এক বছর আগে ৩১শে জুলাই ২০২০ সালে ইভ্যালি নিয়ে মানুষকে অত্যন্ত সতর্ক করে দিয়েছিলাম।
এবং আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আসলে তদন্ত হতে হতে শোকজ নোটিশ পাঠাতে পাঠাতে এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয়ে চিঠি যেতে যেতে ব্যবস্থা এবং তারপর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে করতে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছে।
অবশ্য প্রতারণা করে মানুষের টাকা লোপাট করার যুগ শুধু যে এই ডিজিটাল যুগের সূচনাতেই হয়েছে তা নয়। সবসময়ই কিছু প্রতারক নানাভাবেই নানা ছলেবলে কৌশলে প্রতারণা করে এসছে।
এবং এই শতকের প্রথম সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারণা শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। জিজিএন নামে একটি প্রতিষ্ঠান মানুষকে এমএলএম-র নামে প্রতারিত করতে শুরু করে। সেইসময়ই আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের এমএলএম সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম।
জিজিএনের পরে এলো আইটিসিএল (ইসলামিক ট্রেড এন্ড কমার্স লিমিটেড)। তারা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুরাগকে ব্যবহার করে হাজার হাজার মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লোপাট করে।
তারপর যুবক ডেসটিনি ইউনি পে টু ইউ এবং এর সাথে ২৬৬টি সমবায় সমিতি লক্ষ লক্ষ মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
ডেসটিনির যখন রমরমা অবস্থা সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আনুকুল্য পেয়ে যখন তারা তরতর করে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করছে তরতর করে মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তখনও আমরা নিঃশঙ্কচিত্তে তাদের প্রতারণার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিলাম।
ইউনি পে টু ইউ-র ব্যাপারেও আমাদের একই বক্তব্য ছিল। আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের বলিষ্ঠভাবে সতর্ক করেছিলাম। এরপরে শুরু হলো সাম্প্রতিক ই-কমার্স যুগ গত পাঁচ বছরের। এবং ইভ্যালি ই-অরেঞ্জ ধামাকা শপিং আরো কত নামে কতকিছু।
আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই সতর্ক করেছিলাম। আমরা প্রত্যেককে বলেছিলাম যে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজেদের বিচার বুদ্ধি বিচার বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে। পরম করুণাময় যে জ্ঞান যে মস্তিষ্ক আমাদের দিয়েছেন যে-কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে এই মস্তিষ্ককে ঠান্ডা মাথায় কাজে লাগাতে হবে। বিচার বিবেচনা করে কাজ করতে হবে।