দেহ এবং মন দুটোকে শিথিল করার জন্যে দমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দমটাকে যত ধীর করতে পারবেন দেহ তত স্থির হবে। এজন্যে দমের প্রাকটিস করতে হবে।
যখন আপনি হাঁটছেন তখন দম নিতে নিতে হাঁটছেন, দম ছাড়তে ছাড়তে হাঁটছেন। তো দম নিতে নিতে যদি আট পা যান, তাহলে দম ছাড়তে ছাড়তে যাবেন ১২ পা। অর্থাৎ যে সময়টুকুতে নেবেন, তার চেয়ে একটু বেশি সময় ধরে দমটা ছাড়বেন।
আর যদি দম দ্রুত নেন এবং দ্রুত ছাড়েন তাহলে কী হবে? ধরুন আপনি চুলাতে রুটি বানানোর সময় যদি কামারের হাপর চালানোর মতো তাপ দিতে থাকেন, তাহলে কী হবে! রুটি হবে না, লোহা গরম করতে পারবেন।
অবশ্য লোহা গরম করা, দেটস এন আর্ট। আপনারা কামারের ঘরে অনেকে হয়তো যান নাই, যাওয়ার সুযোগ হয় নাই। আবার অনেকে কামার দেখেনও নাই। কামার আবার কী জিনিস! যাইহোক কামারের বাতাস দেয়ার যে পদ্ধতি, সেটাও কন্ট্রোলড।
কন্ট্রোলড মানে কী? পরিমিত। এই পরিমাণটাকে ঠিক করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দমের ওপরে আপনার কন্ট্রোল আসতে হবে। শিথিলায়ন যে করবেন শিথিল তত ভালো হতে পারবেন যত দমের ওপরে আপনার কন্ট্রোল থাকবে, যত দমের চর্চা আপনি করবেন। তাই সবসময় দমের চর্চা করবেন। যেখানেই যান দমের চর্চা করেন। দাঁড়িয়ে আছেন দমের চর্চা করেন। এই একটা চর্চায় কোনো ক্ষতি নাই। আস্তে আস্তে এটা অটোমেশন হবে।
আমরা যে দম নিই। দম নিই কী করে? আমরা অটোমেটিক দম নিই। জন্ম থেকে অটোমেটিক নেয়া, যেভাবে চলছে চলছে। আরেকটা হচ্ছে, অভ্যাসকে আয়ত্ত করা। প্রাকটিস করে সে জিনিসটাকে আয়ত্ত করা।
দুটোই করা যায়। যখন আপনি রেগুলার প্রাকটিস করতে থাকবেন তখন আপনার বডি অটোমেশনে চলে যাবে। ব্রেন খুব শার্প খুব চালাক। সুযোগ পেলে সে নিজেকে ব্যবহার করতে চায় না। সুযোগ পেলে সে অলস থাকতে চায়। সে অটোমেশনে দিয়ে দেয়।
ধরুন এখন ব্রেন একভাবে অভ্যস্ত দম নেয়ার ক্ষেত্রে। ইনস্ট্রাকশন একভাবে আছে। কিছুদিন পরে ব্রেন দেখল, যে না এ তো বডি থেকে অন্যরকম ইনস্ট্রাকশন আসছে। তখন ব্রেন এভাবে দম নেয়া দম ছাড়াটাকেই সে তার অটোমেশনে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটার জন্যে কিছু দিন প্রাকটিস করতে হবে।
এজন্যে কিছুদিন দমের চর্চা করেন। সবসময় দমের চর্চা। হাঁটতে হাঁটতে কী করেন, ৮ কদমে দম নেন ১২ কদমে দম ছাড়েন। তারপরে ১০ কদমে দম নেন ১৪ কদমে ছাড়েন। তারপরে ১২ কদমে দম নেন ২০ কদমে ছাড়েন। আস্তে আস্তে আস্তে এটা বাড়তে থাকবে। দেখবেন যে দম রিটেইন করা অর্থাৎ অক্সিজেনটাকে নিজের ভেতরে রাখার অটোমেটিক সিস্টেম তৈরি হবে আপনার। এই অক্সিজেন রিটেইন করাটা দেহটাকে স্থির করার একটা খুব চমৎকার উপায়।