1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন

ধূমপান ছাড়ার পক্ষে ৬৬ শতাংশ

  • সময় বুধবার, ২ জুন, ২০২১
  • ১২১১ বার দেখা হয়েছে

দেশের ৬৬ শতাংশ ধূমপায়ীর ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু ছেড়ে দেওয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ সীমিত। ধূমপান ও তামাক ছাড়তে অপেক্ষাকৃত উপযোগী ব্যবস্থা হলো কাউন্সেলিং বা আচরণ পরিবর্তনের জন্যে পরামর্শসেবা। দেশে এ ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। এ প্রেক্ষাপটে ৩১ মে পালিত হয় বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি।’ ৩১ মে ২০২১ প্রথম আলোতে এ বিষয়ে লিখেছেন পার্থ শঙ্কর সাহা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয় ৪ লাখ মানুষ। মৃত্যু হয় ১ লাখ ৬০ হাজার জনের। ৩৫ শতাংশের বেশি মানুষ তামাক ব্যবহার করে। তামাক ব্যবহারকারীদের ৪৬ শতাংশ পুরুষ ও ২৫ শতাংশ নারী। ধোঁয়াবিহীন তামাক অর্থাৎ জর্দা, গুল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি মানুষ। সিগারেট খায় ১৪ শতাংশের বেশি। একজন ধূমপায়ীর সিগারেটের জন্যে প্রতি মাসের ব্যয় প্রায় ১ হাজার ১০০ টাকা। দিন দিন বাড়ছে তামাকের আসক্তির পরিমাণ।

ধূমপান ছাড়ার পক্ষে ৬৬ শতাংশ

ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭–এর তথ্যমতে, দেশের ৬৬.২ শতাংশ ধূমপায়ী এ অভ্যাস ছেড়ে দিতে চান। আর ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনকারীদের ৫৩ শতাংশ ছাড়ার পক্ষে।

বিপুলসংখ্যক মানুষের তামাক ও ধূমপান ছাড়ার ইচ্ছা থাকলেও তাদের সহায়তা করার জন্যে সরকারি উদ্যোগ প্রায় নেই। বেসরকারি উদ্যোগ আছে সীমিত পরিসরে। চিকিৎসক ও গবেষকদের মতে, ধূমপান ছাড়াতে দুই ধরনের পদ্ধতি আছে। একটি হলো আচরণ পরিবর্তনের জন্যে কাউন্সেলিং আর দ্বিতীয়টি ওষুধ। খুব বেশি আসক্তদের জন্যে ওষুধের প্রয়োজন।

জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুস শাকুর খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তামাক বা সিগারেট ছাড়ানোর ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং কাজ করে। ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার করতে হতে পারে।’

বাংলাদেশে ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ধূমপায়ী টিবি রোগীদের ওপর এক গবেষণা হয়। এতে অংশ নেন ১ হাজার ৫২৭ জন টিবি রোগী। তাদের সবাইকে আট মিনিটের আচরণ পরিবর্তনসংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হয়। গবেষণায় অংশ নেওয়া অর্ধেক রোগীকে ধূমপান ছাড়াতে সাহায্যকারী ওষুধ সাইটিসিন দেওয়া হয়। আর অর্ধেককে দেওয়া হয়নি। দেখা গেছে, এ পরামর্শ যারা গ্রহণ করেছেন, তাদের এক-তৃতীয়াংশ ছয় মাসের মধ্যে ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন। যারা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাদের এক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, তারা আর সিগারেট ধরেননি।

বেসরকারি সংগঠন আর্ক ফাউন্ডেশন এ গবেষণা করে। গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‌‘যাদের সাইটিসিন দেওয়া হয়েছিল, তাদের এ ওষুধে আলাদা কোনো উপকার হয়নি। এটা শুধু অংশগ্রহণকারীদের কথায় নয়, জৈবপ্রযুক্তি পরীক্ষায় এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাউন্সেলিংয়ে বেশি উপকার পাওয়া গেছে।’

ধূমপান ছাড়াতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার কিছু পদ্ধতির কথা বলেছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি মনে করেন, জাতীয় পর্যায়ে একটি টেলিফোনের হটলাইন থাকতে পারে, যার মাধ্যমে ধূমপায়ীরা এখান থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। প্রতিটি হাসপাতালে এমন ব্যবস্থা থাকা দরকার, যেখানে কোনো রোগী কোনো না কোনোবার পাঁচ মিনিটের জন্যে হলেও সংক্ষিপ্ত পরামর্শসেবা পান। এ ছাড়া চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়।

সরকারিভাবে রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ছয় বছর আগে ‘তামাক নিবারণ কেন্দ্র’ করা হয়। এর উদ্দেশ্যে ছিল এখানকার বহির্বিভাগে আসা রোগীদের চিকিৎসক ও নার্সরা কাউন্সেলিং করবেন। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক আবদুস শাকুর খান বলেন, ‘এটা মাত্র সপ্তাহখানেক চলেছিল। রাজনৈতিক দলাদলির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। অথচ এটা খুব দরকার ছিল।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত আইনটি সংশোধনের চেষ্টা চলছে। একটি রোডম্যাপ তৈরি হচ্ছে, যেখানে তামাক ছাড়ানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো আলোচনা হচ্ছে, সেগুলো যুক্ত করার বিষয় আছে।’

 

সূত্র: প্রথম আলো (৩১ মে ২০২১)

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com