1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন

পুরো এশিয়ায় মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনায় শীর্ষে বাংলাদেশ

  • সময় রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ৭৯৮ বার দেখা হয়েছে

প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেই চলেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক ও দুুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্যমতে, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এখন শীর্ষে অবস্থান করা দেশটির নাম বাংলাদেশ। ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনা নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এআরআই ‘আ রিভিউ অব মোটরসাইকেল সেফটি সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাত দিয়ে এআরআইয়ের গবেষকরা জানান, এ তালিকায় সবচেয়ে নিচে আছে ভুটান।

প্রতি ১০ হাজার মোটরসাইকেলের মধ্যে বাংলাদেশে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ২৮ দশমিক ৪টি। এর ধারেকাছেও নেই এশিয়ার অন্য দেশগুলো। বাংলাদেশের পর কম্বোডিয়ায় ১১ দশমিক ৯, লাওসে ১১ দশমিক ৫, থাইল্যান্ডে ১১ দশমিক ২, ভারতে ৯, মিয়ানমারে ৮ দশমিক ৬, মালয়েশিয়ায় ৪ দশমিক ৪, ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ১, ইন্দোনেশিয়ায় ২ দশমিক ৫ এবং ভুটানে ২ দশমিক ১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। গবেষণাপত্রের ভাষ্যমতে, দেশের মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনার ৭৪ শতাংশই মফস্বলে ঘটে। এর বড় কারণ হলো সেখানে ট্রাফিক তদারকি কম। এছাড়া মফস্বলের যাত্রীরা মহাসড়কে বেশি যাতায়াত করেন বলেও দুুর্ঘটনা বেশি ঘটে। মফস্বলের ৭৪ শতাংশ সড়ক দুুর্ঘটনার ৬৯ শতাংশই মহাসড়কে ঘটে। মফস্বলের বিপরীতে নগর-মহানগরে মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনার পরিমাণ ৩১ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনায় বেশি মারা গেছে বলে তথ্য উঠে আসে। তবে ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হারও উদ্বেগজনক।

মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনার মোট মৃত্যুর ৫৬ শতাংশই ওই বয়সের এবং ৯৬ শতাংশই পুরুষ বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। সপ্তাহের কী বার এবং দিনের কোন সময় বেশি মোটরসাইকেল দুুর্ঘটনা ঘটে, এ ব্যাপারেও এআরআইয়ের গবেষকরা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে শনিবার সবচেয়ে বেশি এবং রোববার সবচেয়ে কম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। পরিসংখানে দেখা গেছে, শনিবার ১৬ শতাংশ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ১৫ শতাংশ, সোম ও বুধবার ১৪ শতাংশ, মঙ্গলবার ১৩ শতাংশ এবং রোববার ১২ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সময় বিবেচনায় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দুুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এক্ষেত্রে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে (সকাল ১০-১১টা) এবং বাড়ি ফেরার পথে (বিকাল ৪-৫টা) বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ হেলমেট না পরার কারণে এবং ১২ শতাংশ ত্রুটিযুক্ত হেলমেট পরার কারণে মারা গেছেন। এআরআইয়ের গবেষকরা মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের সরাসরি প্রশ্ন করে জানতে পেরেছেন, শতকরা ৪৩ শতাংশ মোটরসাইকেলচালক হেলমেট ব্যবহার করেন না। এর কারণ হিসেবে চালকরা বলেছেন, হেলমেট পরার কারণে তারা বেশ গরম অনুভব করেন। ২৫ শতাংশ চালক হেলমেট পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না এবং ১১ শতাংশ চালক কাছাকাছি দূরত্বে যাতায়াতের সময় হেলমেট পরেন না।

৫ শতাংশ চালক বলেছেন, তাদের কোনো হেলমেট নেই। গবেষণায় উঠে এসেছে অতিরিক্ত গতির কারণে মোটরসাইকেল হঠাৎ করেই ব্রেক করা যায় না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে রাস্তা পিচ্ছিল থাকার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি কমন কারণ হলো সড়কের বাঁক। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত গতির কারণে ৫১ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়। অমনোযোগী অবস্থায় চালাতে গিয়ে ৪০ শতাংশ এবং মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪৯ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘২০১৬ সালে বাংলাদেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেল ছিল সাত লাখ। এখন সেটা ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এত বিপুল পরিমাণ মোটরসাইকেল বাড়ার ফলে দুর্ঘটনা আরো বেড়েছে। দুর্ঘটনা বাড়ার প্রধান কারণ হলো, সড়কে যথাযথ আইনের প্রয়োগ নেই। নগর-মহানগরে কিছু তদারকি হচ্ছে, কিন্তু মফস্বলে তেমন কড়াকড়ি নেই। ফলে এখনো মফস্বলেই সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com