উৎপাদন বাড়াতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে এ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয় ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রোববার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিবছরের মতো এ বছরও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর এবং এ সময়ে জেলেদের সহায়তা দিতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২২ দিন গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সমুদ্র মোহনায় কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবারের মৌসুমের শুরু থেকেই নদনদীতে ইলিশ সংকট ছিল প্রকট। সংকট নিয়েই ১ জুলাই থেকে ইলিশ মৌসুম শুরু হয়। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে হলেও নদনদীতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে বলে আশার কথা শুনিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা; কিন্তু তা হয়নি।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার নদনদী ও সংলগ্ন সাগরে এবার গত বছরের চেয়ে তিন ভাগের এক ভাগ ইলিশ আহরিত হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় জানিয়েছে, গত ১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ বিভাগের মোকামগুলোতে ৩৭ হাজার ১৩৮ টন ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৯৪৭ টন। এ তিন মাসের হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবার ৭০ হাজার ৮৩৬ টন কম ইলিশ কেনাবেচা হয়েছে।
দক্ষিণের নদনদীতে ইলিশ কম পাওয়া প্রসঙ্গে চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, নদনদীর নাব্য কমে যাওয়া এবং দূষণের কারণে সাগর থেকে নদনদীতে ইলিশ আসা দুই বছর ধরে কমে গেছে। এ বছর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলেদের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারও এর জন্য দায়ী। ইলিশসম্পদ বাঁচাতে এ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল কুদ্দুস জানান, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। তা ছাড়া এ সময়ে মা ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলেদের সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেওয়া হবে।