শুধু তারকা নন, শুধু জাতীয় প্রতিষ্ঠান নন, প্রতারণার ক্ষেত্রে কোনো আলেম যাতে ব্যবহৃত না হন সে ব্যাপারে তাদেরও সচেতন থাকা প্রয়োজন।
সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এহসান গ্রুপ নামে যে এমএলএম কোম্পানি গ্রাহকদের প্রতারিত করেছেন তাদের পক্ষে একজন জনপ্রিয় আলেম নাকি দীর্ঘদিন প্রচারণা চালিয়েছেন।
তিনি নাকি বলেছেন- এহসান গ্রুপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। যদি সন্দেহ করো তাহলে তুমি মোনাফেক। এহসান গ্রুপ নাকি বাংলাদেশ নয় গোটা জগতের জন্যে রহমতস্বরূপ।
আসলে তিনি হয়তো নিজেও বোঝেন নি যে তিনি একটি প্রতারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে একজন ইনফ্লুয়েন্সার বা প্রলুব্ধকারক হিসেবে কাজ করছেন।
আসলে সাধারণ মানুষ আলেম সমাজকে সবসময়ই সম্মানের চোখে দেখেন। অতএব তাদের যে-কেউ যে-কোনো কোম্পানি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে যে-কোনো বক্তব্য দেয়ার আগে পুরো বিষয়টি আরো গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করে তারপরে মতামত ব্যক্ত করবেন এটাই সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে।
‘শর্টকাটে পয়সাওয়ালা’ এক সর্বগ্রাসী সামাজিক প্রবণতা!
আসলে প্রতারক তো প্রতারকই। প্রলুব্ধকারক বা ইনফ্লুয়েন্সার বা প্রভাবক সে ব্যক্তি হোন তারকা হোন বা কোনো প্রতিষ্ঠান হোন তার দায় যেরকম কম নয়, একইভাবে যিনি লোভে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন তার দায় কি কোনো অংশে কম?
আসলে এমএলএম কোম্পানিগুলো সে এনালগ কোম্পানি হোক বা ডিজিটাল কোম্পানি হোক ই-কমার্স হোক বা ধর্মের নামে হোক এদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তারা যে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করতে পেরেছে এর কারণ আমাদের চারপাশের মানুষের নতুন প্রবণতা যে দ্রুত আমরা সবাই বড়লোক হতে চাই। খুব অনায়াসে পরিশ্রম না করে মেহনত না করে সবকিছু পেতে চাওয়ার এক সর্বগ্রাসী সামাজিক প্রবণতা।
যারা স্বল্পমূল্যে পণ্য কেনার জন্যে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে আগাম টাকা দিচ্ছেন তারা আসলে লোভের বশবর্তী হয়েই এই কাজটি করছেন। তারা শর্টকাটে পয়সাওয়ালা হতে চাই। পরিশ্রম করে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার চেয়ে রাতারাতি রাতারাতি যেনতেন প্রকারে যেভাবে হোক কিছু পাওয়ার প্রবণতা অত্যন্ত প্রবল। তা সে বৈধ হোক অবৈধ হোক, নৈতিক হোক নৈতিক হোক বা অনৈতিক হোক। যে পথেই আসুক না কেন বড়লোক হতে চাই। এবং এই বড়লোক হতে গিয়ে কেউ প্রথমেই সব হারাই কেউ বা পেয়ে হারাই।
একজন কম্পিউটার অপারেটর দিন উপার্জন দেড়শ টাকা। মালিক হয়ে গেছেন ৪৬০ কোটি টাকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভার বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন কিছু সময়ের জন্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের নিবাস হয়েছে জেলখানায়।