একটি কথা সবার আগে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, আপনার মনের নিয়ন্ত্রক আপনি নিজেই। এটি সত্য যে, জীবনে এমন কিছু সময়ের সম্মুখীন আমাদের হতে হয় যখন ভাগ্যকে দোষ দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না, আর এটি খুব স্বাভাবিক একটি সহজাত মানসিক প্রবৃত্তি। কিন্তু প্রতিনিয়ত যদি আপনি ভাগ্যকে দোষ দিয়ে যান এবং নিজের যোগ্যতার উপর সন্দেহ বা অবজ্ঞা প্রকাশ করতে থাকেন তাহলে সেটা অভ্যাসে পরিণত হতে সময় লাগবে না।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুধু ভালবাসা থাকলেই যে সংসারের বন্ধন দৃঢ় হবে সেটা কিন্তু নয়। অনেকসময় পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে যে কোনো একজনের মনে অপরজনকে নিয়ে জন্ম নিতে পারে ভয়, ঈর্ষা অথবা হীনম্মন্যতা । এহেন নেতিবাচক আত্মধারণা পরবর্তীতে সন্দেহ রূপে প্রকাশ পায়, যা মানসিক যন্ত্রণা দেয় দুজনকেই।
যেমন অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর যে-কোনো একজনই হয়তো ভেবে থাকেন যে, আমি দেখতে অতটা সুন্দরী বা স্মার্ট নই, আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি নয়, আমার জীবনসঙ্গী হয়তো আমাকে নিয়ে সন্তুষ্ট নন, সে যদি আমাকে ছেড়ে চলে যায়, কেন সে অমুকের সাথে এভাবে কথা বলল প্রভৃতি।
এক্ষেত্রে নেতিবাচক আবেগে মন তিক্ত হওয়ার আগে সুযোগ বুঝে সরাসরি কথা বলুন। যদি তার কোনো অক্ষমতা থাকে সেটা সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন। সঙ্গীনির ভালো দিকগুলো তুলে ধরুন। এতে তিনি ভুল সংশোধনে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন।
আসলে অপরপক্ষকে নিয়ে কিছু চিন্তা করার আগে নিজের অবস্থান নিয়ে ভাবুন। নেতিবাচক আবেগে মন তিক্ত হওয়ার আগে সুযোগ বুঝে সরাসরি কথা বলুন। যদি তার কোনো অক্ষমতা থাকে সেটা সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন।
সঙ্গীনির ভালো দিকগুলো তুলে ধরুন। এতে তিনি ভুল সংশোধনে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। একে অপরের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করতে শিখুন। কারণ পারিবারিক সমৃদ্ধির জন্যে সামনে এগুতে হবে আপনার জীবনসঙ্গীকে সাথে নিয়েই।
আর আপনার স্বামী/ স্ত্রী যদি আপনাকে নিয়ে কোনো নেতিবাচক আবেগে আক্রান্ত হয়েও থাকেন। তবে আপনি তার সাথে সম্পূর্ণ ইতিবাচক ব্যবহার করুন, প্রোএকটিভ থাকুন। আপনার সঙ্গী যে আপনাকে কত ভালবাসে এটা সবসময় আকার ইঙ্গিতে তাকে বোঝাতে চেষ্টা করুন। যেমন, আপনিও তাকে বোঝাবেন যে, তুমি আমাকে কত ভালবাসো।
নেতিবাচক চিন্তাকে ছাপিয়ে ইতিবাচক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টায় সবার আগে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, বুঝতে চেষ্টা করুন দিনের ঠিক কোন সময়ে এবং কেন নেতিবাচক চিন্তা করা শুরু করছেন? আপনি যখনই খুঁজে বের করতে পারবেন ঠিক কখন এবং কেন আপনি নেতিবাচক চিন্তা করা শুরু করেছেন তাহলে সেই নেতিবাচক চিন্তার উপর পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন।
নেতিবাচক চিন্তায় আপনি কখন এবং কেন পতিত হচ্ছেন এটা যদি নজরদারীতে রাখতে পারেন তাহলে এই চিন্তা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত নিয়েও জানতে পারবেন। একটি নোটবুকে আপনার নেতিবাচক চিন্তা কেন ও কখন শুরু হয়েছিল তা লিখে রাখুন এবং আপনি এই চিন্তার পর কেমন অনুভব করেছিলেন এবং আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ কী ছিল তা-ও লিখুন।
আমি কত সুখে আছি। কত ভালো আছি। এবং সবাই বলে তুমি আমাকে কত ভালবাসো। অর্থাৎ যতটা পজেটিভ ভাবে তাকে পজেটিভ মানুষ বলা যায়, সেভাবে তাকে বলার চেষ্টা করুন।