সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকরী কৌশলপত্র ত্বরান্বিত হচ্ছে বলে বুধবার জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, সুন্দরবন সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সরকার সম্প্রতি ‘সুন্দরবন সুরক্ষা’ নামক একটি প্রকল্পও সম্পতি একনেকে অনুমোদন করেছে। রাজধানীর একটি হোটেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও সুন্দরবনের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা (সিইএ) বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শাহাব উদ্দিন বলেন,‘সুন্দরবন সংরক্ষণে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে সুন্দরবনসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। প্রস্তুতাধীন কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা প্রতিবেদন এবং কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা সুন্দরবন সংরক্ষণে সুস্পষ্ট গাইড লাইন প্রদান করবে। সে অনুযায়ী দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আমরা সুন্দরবন সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারব বলে তিনি বিশ্বাস করেন।’
তিনি বলেন,দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচুর উন্নয়ন কাজের জন্য উন্নত পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ওই অঞ্চলে উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নীতি, পরিকল্পনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে যাতে সুন্দরবনের ক্ষতি না হয় বরং এর সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে একটি কারিগরি প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও সুন্দরবনের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষাটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমূহ সচেতনতা ও আন্তঃ সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করে সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, সুন্দরবন শুধু আমাদের সম্পদ নয় এটি সারা বিশ্বের সম্পদও বটে। সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস হতে সুন্দরবন আমাদেরকে যেভাবে রক্ষা করে তার কোনো সঠিক অর্থনৈতিক মূল্যায়ন প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া সুন্দরবনের একটি অংশ ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং সমগ্র সুন্দরবন একটি রামসার সাইট। তাই সুন্দরবন সংরক্ষণ আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। ‘একটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সমীক্ষাটি সম্পন্ন করছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিল কৃত প্রাথমিক প্রতিবেদন সমূহ ইতোমধ্যে রিভিউ কমিটি কর্তৃক রিভিউ শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেয়ে যাব,’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসির সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায় পরিবর্তন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খাঁন প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য দেন। সূত্র : ইউএনবি