অমর একুশে বইমেলা আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইমেলা উদ্বোধন করবেন। করোনা মহামারির কারণে দুই সপ্তাহ দেরিতে শুরু হচ্ছে এবারের বইমেলা। ২৮ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
রাজধানীতে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতিসচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান হোসেন প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘মেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে করোনা সংক্রমণের হার কমলে মেলার সময় বাড়তে পারে। মহামারির কারণে একসময় মনে হয়েছিল এবার হয়তো মেলা করতেই পারব না। আশা করছি, মঙ্গলবার (আজ) বিকেল ৩টায় বইমেলার পর্দা উঠবে?’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার দুই সপ্তাহ দেরিতে শুরু হচ্ছে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। রাত ৮টার পর কেউ মেলায় ঢুকতে পারবে না। তবে ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এ ছাড়া মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বইমেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথসহ পুরো মেলার এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে পর্যাপ্তসংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের মেলায় প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।
আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নূরুল হুদা জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সারা দেশে যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, তার প্রতিফলন মেলায় আগত দর্শক-পাঠক ও বঙ্গবন্ধু অনুরাগীরা পাবেন। মেলায় স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে মেনে চলার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গত বছর প্যাভিলিয়নগুলো উদ্যানের মধ্যমাঠে রাখা হয়েছিল। এবার তা সব প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিন্যাসে পরিবর্তন ও সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যুক্ত করা হয়েছে। খাবারের দোকানগুলোতে আগতদের করোনার টিকা নেওয়ার কার্ড দেখানো ছাড়া খাবার পরিবেশন বা বিক্রি করা হবে না।