1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসে অক্টোবর ১৮ সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক-গীতিকার  আইয়ুব বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেন

  • সময় সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
  • ৯৯৩ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশি সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক-গীতিকার এবং গিটারবাদক আইয়ুব বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেন

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৯১তম (অধিবর্ষে ২৯২তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৯৭৩ : মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো চা ও মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হয়।

জন্ম

১৮৯৪ : এইচ. এল. ডেভিস, একজন মার্কিন ঔপনাসিক ও কবি।
১৯০৬ : শিল্প ও সাহিত্যজগতের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়
১৯১৮ : পরিতোষ সেন, ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী।
১৯২৫ : ইলা মিত্র, বাঙালি মহীয়সী নারী এবং সংগ্রামী কৃষক নেতা।
১৯৪০ : পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি অভিনেতা।
১৯৬৪ : শেখ রাসেল, শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ ছেলে।
১৯৬৫ : জাকির নায়েক, ইসলামি পণ্ডিত ও গবেষক।

মৃত্যু

১৮৭১ : ইংরেজ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজ
১৯২৩ : বাঙালি ঔপন্যাসিক মোহাম্মদ নজিবর রহমান
১৯৩১ : মার্কিন উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ী টমাস আলভা এডিসন
২০০৪ : প্রখ্যাত বাঙালি ভ্রমণ সাহিত্যিক শঙ্কু মহারাজ
২০১৮ : বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু

শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু

আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একজন বাংলাদেশি সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক-গীতিকার এবং গিটারবাদক। তিনি রক ব্যান্ড এলআরবি-র গায়ক ও গিটারবাদক হিসেবে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতের ধারায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী এবং গিটারবাদক বলা হয়। আইয়ুব বাচ্চু পরিচিত নাম হলেও তার পুরো নাম আইয়ুব বাচ্চু রবিন, এবি নামেও তিনি বেশ পরিচিত।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নে। বাবা ইশহাক চোধুরী এবং মা নুরজাহান বেগম। তাদের পরিবার ছিল একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। পড়াশুনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধীন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পর তার বাবা চট্টগ্রাম শহরের জুবিলি রোড এলাকায় একটি বাড়ি কেনেন; যেখানে তার কৈশোরের বেশি সময় কাটে। কিশোর বয়স থেকেই সঙ্গীত নিয়ে স্বপ্ন বুনছিলেন। পরিবারের তেমন কেউ গানের সঙ্গে না থাকলেও শৈশব থেকেই গানের প্রতি তার ঝোঁক ছিল। আধুনিক-লোকগীতি ও ক্লাসিক্যালের পাশাপাশি প্রচুর ওয়েস্টার্ন গান শুনতেন। ব্যান্ড কিংবা গিটার-দুটোতেই তিনি ছিলেন কিংবদন্তি। তাকে বলা হয়, বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীত এগিয়ে নেয়ার অন্যতম অগ্রপথিক।

চট্টগ্রামে কলেজ জীবনে সহপাঠী বন্ধুদের নিয়ে তিনি একটি ব্যান্ডদল গড়ে তোলেন। এর নাম ছিল ‘গোল্ডেন বয়েজ’। পরে নাম বদলে করা হয় ‘আগলি বয়েজ’। সেই ব্যান্ডের গায়ক ছিল কুমার বিশ্বজিৎ এবং বাচ্চু ছিল গিটারিস্ট। সেই সময়ে তারা মূলত পটিয়ায় বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানে গান গাইতেন এবং শহরের বিভিন্ন ক্লাবে গান করতেন।

আইয়ুব বাচ্চুর সংগীত জগতে যাত্রা শুরু হয় ফিলিংস ব্যান্ডের সঙ্গে ১৯৭৮ সালে। তার কণ্ঠ দেয়া প্রথম গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। এরপর যোগ দেন সোলসে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি সোলসের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি প্রথম রক্তগোলাপ নামে একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামটি তেমন সাফল্য না পেলেও ১৯৮৮ সালে সফলতার শুরু তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’ দিয়ে।

নব্বই দশকের শেষদিকে বাচ্চু সোলস থেকে বের হয়ে আসার পর ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং জানুয়ারিতে ফেরদৌস চন্দনার সাথে তার বিয়ে হয়, যার সাথে তার ১৯৮৬ সাল থেকে সম্পর্ক ছিল। তিনি ‘ইয়েলো রিভার ব্যান্ড’ নামের একটি ব্যান্ড গঠন করেন। এর ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল এস আই টুটুল (কী বোর্ডস), সাইদুল হাসান স্বপন (বেজ গিটার) এবং হাবিব আনোয়ার জয় (ড্রামস) নিয়ে যাত্রা শুরু করেন নিজের ব্যান্ড দলের।

১৯৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তারা ভারতে অনুষ্ঠান করতে গেলে তাদের ভুলে ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’ নামে পরিচিত করানে হয়। নামটি বাচ্চু পছন্দ করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তার ব্যান্ড নামকরণ করেন। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে, এলআরবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রথম কনসার্টটি করে।

১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে প্রথম ডাবল অ্যালবাম: এলআরবি ১ এবং এলআরবি ২ প্রকাশ করেছিল। ব্যান্ডটির তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম সুখ, জুনে মুক্তি পায় এবং এটি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ রক অ্যালবামগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে ‘চলো বদলে যাই গানটি ছিল; যা বাচ্চুর সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বিবেচিত। নব্বইয়ের দশকে আরও কয়েকটি অ্যালবাম প্রকাশ করে এবং শীঘ্রই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রক ব্যান্ডের মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। আইয়ুব বাচ্চু মানেই উন্মাতাল ভক্তে পরিপূর্ণ গ্যালারি। দেশীয় ব্যান্ড সংগীতের তিনি ছিলেন মধ্যমণি।

আইয়ুব বাচ্চুর সংগীত জীবনের অন্যান্য ব্যান্ড অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- তবুও, ঘুমন্ত শহরে, ফেরারী মন, স্বপ্ন, আমাদের বিস্ময়, মন চাইলে মন পাবে, অচেনা জীবন, মনে আছে নাকি নেই, স্পর্শ, যুদ্ধ ইত্যাদি।

একক অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- রক্তগোলাপ, ময়না, কষ্ট, সময়, একা, প্রেম তুমি কি, দুটি মন, কাফেলা, প্রেম প্রেমের মতো, পথের গান, ভাটির টানে মাটির গানে, জীবন, সাউন্ড অব সাইলেন্স (ইন্সট্রুমেন্টাল, ২০০৭), রিমঝিম বৃষ্টি, বলিনি কখনো, জীবনের গল্প ইত্যাদি।

এ ছাড়া অনেক মিশ্র অ্যালবামে তিনি কাজ করেছেন। এর মধ্যে প্রিন্স মাহমুদের সুরে করা মিশ্র অ্যালবামগুলোতে তার গান আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়। তার সেরা গানগুলো নিয়ে একটি অ্যালবাম বের করা হয়। প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রেও গেয়েছেন। যেখানে তার আম্মাজান গানটি বাংলা সিনেমার ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলোর একটি ধরা হয়।

আইয়ুব বাচ্চুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে ১৮ ফুট উচ্চতার একটি গিটারের ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। রূপালি গিটার আইয়ুব বাচ্চুর একটি জনপ্রিয় গানের শিরোনাম অনুসারে এই ভাস্কর্যের নাম রাখা হয় রূপালি গিটার।

আইয়ুব বাচ্চু ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। চলে যান তার ‘সেই তারা ভরা রাতে’র আকাশে। তবে তার এ চলে যাওয়া মানে সবকিছুই শেষ নয়। তিনি চলে গেলেও সঙ্গীতপ্রিয় কোটি মানুষের হৃদয়ে তিনি আজও জেগে আছেন এক জন্মহীন নক্ষত্রের মতোই।

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com