বাংলাদেশের একজন আধুনিক
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৯৬তম (অধিবর্ষে ২৯৭তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮১৪ : ইংল্যান্ডে প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়।
১৯৩২ : রেডিওতে ফ্রেড অ্যালেন শো শুরু হয়।
১৮৮৬ : সুখলতা রাও, প্রখ্যাত বাঙালি শিশু সাহিত্যিক ও সমাজসেবী।
১৯২৯ : শামসুর রাহমান, বাঙালি কবি ও লেখক।
১৯৪০ : পেলে, ব্রাজিলের ফুটবল জাদুকর নামে পরিচিত বিশ্বনন্দিত খেলোয়াড়।
১৯৪১ : চাষী নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৪৩ : মোহাম্মদ রফিক, বাংলাদেশি কবি।
১৯৫৮ : হানিফ সংকেত, বাংলাদেশি টেলিভিশন উপস্থাপক, লেখক ও নির্মাতা।
১৯৪৬ : সৈয়দ আবুল মকসুদ, কবি, লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট।
১৬২৩ : বিশিষ্ট হিন্দি কবি ও রামায়ণ রচয়িতা তুলসীদাস।
১৯৭৩ : রাজনৈতিক কর্মী ও সমাজসেবী, স্বাধীনতা নিরলস সংগ্রামী নেলী সেনগুপ্তা।
২০০৫ : বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক।
২০১২ : বাঙালি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
মোল দিবস
মোহাম্মদ রফিক বাংলাদেশের একজন কবি, লেখক ও শিক্ষক। তিনি একজন মননশীল আধুনিক কবি হিসেবে পরিগণিত; যার আত্মপ্রকাশ ষাটের দশকে। ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলন ও কবিতায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কাব্যিক রসদ যুগিয়ে তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার বৈটপুরে। বাবা সামছুদ্দীন আহমদ এবং মায়ের নাম রেশাতুন নাহার। আট ভাই-বোনের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ।
শৈশব কাটে বাগেরহাটে। ম্যাট্রিক পাশ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু পরে ঢাকা কলেজে মানবিক বিভাগে চলে যান। এ সময় কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়; যা তার সাহিত্যিক চেতনায় প্রগাঢ় ছাপ ফেলে। বিএ পাশ করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে এমএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
ষাটের দশকের প্রথমদিকে সমকাল, কণ্ঠস্বর, স্বাক্ষর, অচিরা ইত্যাদি পত্র-পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। তার কবিতায় নৈসর্গিক আবহে লালিত আধুনিক মানস-চেতনার প্রচ্ছাপ লক্ষ্য করা যায়। কবিতায়, জ্ঞাতে হোক আর অজ্ঞাতে হোক, রয়েছে দৃষ্টান্তবাদী মনীষা।
যেন শহরে নয়, গাঁয়ে থেকে গাঁয়ের কাব্যবয়ান করেছেন, নদীর পাশে বসে লিখেছেন নৌকোর দৌড়াদৌড়ি, নদীনির্ভর জীবনের ব্যস্ততা। ‘গাওদিয়া’ তার একটি বহুলপঠিত কাব্যগ্রন্থ। তিনি প্রধানত কবি হলেও কিছু গদ্যগ্রন্থ রচনা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই তার কবিতা সমকালসহ বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় ছাপা হতে থাকে। এ সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয়, কিন্তু এমএ পরীক্ষার জন্যে তিনি ছাড়া পান। ১৯৭১ সালে তিনি প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের কর্মকর্তা হিসেবে এবং পরে স্বাধীন বাংলা বেতারেও কাজ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন। জুন ২০০৯ পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এরপর অবসর নেন।
প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে- ধুলোর সংসারে এই মাটি, কীর্তিনাশা, কপিলা, মেঘে ও কাদায়, খোলা কবিতা, গাওদিয়া, মানব পদাবলী, মৎস্যগন্ধা, বিষখালী সন্ধ্যা, নোনাঝাউ, আত্মরক্ষার প্রতিবেদন, স্মৃতি বিস্মৃতি অন্তরাল, ভালবাসার জীবনানন্দ, গল্প সংগ্রহ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থ পুরস্কার, জেমকন সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন স্বীকৃতি ও পুরস্কার অর্জন করেছেন।
সূত্র: সংগৃহীত