১৮৫৬ : রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উপস্থিতিতে প্রথম বিধবা বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
১৮৭২ : বাংলায় প্রথম নাট্যশালা ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত এবং দীনবন্ধু মিত্রের নাটক ‘নীল দর্পণ’ অভিনীত।
১৯৮৫ : ঢাকায় প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন।
১৯২৮ : নোম চম্স্কি, মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী ও দার্শনিক।
১৯৩৩ : মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর নামে বহু পরিচিত বাঙালি সাহিত্যিক।
১৯৭০ : মার্কিন স্থপতি, লেখক, কার্টুনিস্ট, প্রকৌশলী ও আবিষ্কারক রুব গোল্ডবার্গ।
২০১৪ : বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা খলিল উল্লাহ খান।
পুরো নাম আবুল ফজল মোহম্মদ খলিল উল্লাহ খান। সংস্কৃতি অঙ্গনে খলিল নামেই ব্যাপক পরিচিত। ষাটের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক ছিলেন। ১৯৫৯ সালে কলিম শরাফী ও জহির রায়হান পরিচালিত ‘সোনার কাজল’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পদার্পণ। এরপর বহু সিনেমায় তাকে খলচরিত্রে দেখা গেছে। খলিল তার ৫৪ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ৮০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। টেলিভিশন নাটক সংশপ্তকের ‘মিয়ার বেটা’ নামে তিনি এখনও গ্রামবাংলার মানুষের কাছেও পরিচিত।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালে ভারতের মেদিনীপুরে। বাবা মরহুম শফিউল হক খান ও মা মেহেরুন্নেছা। তাদের পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের কুমারপাড়ায়। বাবার চাকরিসূত্রে দুই বছর বয়সে সিলেটে চলে আসেন তিনি। সেখানেই তার শৈশব কাটে। বাবার পুলিশ অফিসারের চাকরির সুবাদে খলিলে৬র শৈশব জীবন কাটে মেদিনীপুর, কৃষ্ণনগর, বগুড়া, বর্ধমান, নোয়াখালীতে।
সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ১৯৫১ সালে মদনমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন। পরবর্তীতে সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৩ সালে তৎকালীন আনসার বাহিনীতে অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে অবসর নেন ১৯৯২ সালে।
১৯৫৯ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সোনার কাজল’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সোনার কাজল, আলোর মিছিল, অশান্ত ঢেউ, কাজল, জংলী ফুল, ভাওয়াল সন্ন্যাসী, বেগানা, সমাপ্তি, তানসেন, নদের চাঁদ, মাটির ঘর, পাগলা রাজা, অলংকার, মিন্টু আমার নাম, ফকির মজনু শাহ, কন্যাবদল, সঙ্গম, সোনার চেয়ে দামি, বদলা, মেঘের পর মেঘ, আয়না, মধুমতি, ওয়াদা, বিনি সুতোর মালা, মাটির পুতুল, গুণ্ডা, বউ কথা কও, দিদার, আওয়াজ, নবাব, যৌতুক উল্লেখযোগ্য।
বাংলার পাশাপাশি তিনি উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ক্যায়সে কহু, পুনম কি রাত, উলঝন প্রভৃতি। প্রতিটি ছবিতেই তার অনবদ্য অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করেছে।
চলচ্চিত্র ছাড়াও টেলিভিশন অভিনয়েও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। আশির দশকে টেলিভিশন পর্দা আসেন খলিল। তার অভিনীত বিশেষ নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আব্দুল্লাহ আল মামুনের ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’।
১৯৬৫ সালে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খলিল পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ‘সিপাহী’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ নামে দুটি সিনেমার প্রযোজনাও করেন তিনি।
ইতিহাসনির্ভর ‘ফকির মজনু শাহ’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেও তিনি ভূয়সী প্রশংসা পান। প্রয়াত পরিচালক আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘গুন্ডা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান খলিল।
খলিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্যে ২০১২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন খলিল।
খলিল ১৯৫৪ সালে মানিকগঞ্জের রাবেয়া খানমকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত