১৬৬৬ : দুই কুকুরের দেহে প্রথম রক্ত সঞ্চালন করা হয়।
১৮৯৬ : নায়াগ্রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়।
১৯০৮ : খ্যাতনামা বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন প্রথম আলোক-সংক্রান্ত কোয়ান্টাম তত্ত্ব উপস্থাপন করেছিলেন।
১৯২২ : যুক্তরাজ্য থেকে বিবিসি (ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন) প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রথম বিবিসি রেডিও প্রচার শুরু হয়।
১৭৬৫ : রবার্ট ফুলটন, আমেরিকান প্রকৌশলী ও স্টিমবোটের উদ্ভাবক।
১৮৪০ : ক্লোদ মনে, ফ্রান্সের এক বিখ্যাত ধারণাবাদী (ইম্প্রেশনিস্ট) চিত্রশিল্পী।
১৮৮৯ : জহরলাল নেহরু, ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের ও স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
১৮৯১ : ফ্রেডরিক ব্যানটিং, কানাডীয় চিকিৎসক, চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং ইনসুলিন এর সহ-আবিষ্কারক।
১৯৪৪ : কারেন আর্মস্ট্রং, ইংরেজ লেখক।
১৯৩৮ : আবু তাহের, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার।
১৮৩১ : ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াইকারী শহীদ তিতুমীর।
১৮৩২ : ডেনীয় ভাষাতাত্ত্বিক ও পণ্ডিত রাস্মুস রাস্ক।
১৯১৬ : ইংরেজি ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোট গল্পকার সাকি।
১৯২০ : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী রাজা সুবোধচন্দ্র বসু মল্লিক।
২০০৮ : আমেরিকান লেখক ক্রিস্টিন হান্টার।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, আদর্শবাদী, পণ্ডিত এবং কূটনীতিবিদ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। লেখক হিসেবেও নেহেরু ছিলেন বিশিষ্ট। ইংরেজিতে লেখা তার তিনটি বিখ্যাত বই- ‘একটি আত্মজীবনী’, ‘বিশ্ব ইতিহাসের কিছু চিত্র’, এবং ‘ভারত আবিষ্কার’ চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করেছে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর এলাহাবাদে। প্রথম শিক্ষার পাঠ বাড়িতেই গৃহশিক্ষদের কাছে। পনেরো বছর বয়সে তার ইংল্যান্ড যাত্রা। হ্যারো-তে দু’বছর থাকার পর তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন প্রকৃতি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার জন্যে। এরপর তিনি ব্যারিস্টারির কাজ শুরু করেন। বাবা মতিলাল নেহেরু একজন ধনী ব্রিটিশ ভারতের নামজাদা ব্যারিস্টার ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। মা ছিলেন স্বরুপ রানি।
১৯১২ সালে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে তিনি সরাসরি রাজনীতির সংস্পর্শে চলে আসেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই বিদেশি ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম তাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করত। আয়ারল্যান্ডের সিন ফিন আন্দোলনের বিষয়ে জানতে তিনি খুবই উৎসাহী হয়ে ওঠেন। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারতে ফিরে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে তিনি যুক্ত হয়ে পড়েন।
১৯৪০ সালের ৩১ অক্টোবর বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণে ভারতকে বাধ্য করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ শুরু করার অপরাধে পণ্ডিত নেহরুকে কারারুদ্ধ করা হয়। পরে, ১৯৪১ সালে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে তাকেও মুক্তি দেওয়া হয়। ১৯৪২-এর ৭ আগস্ট বোম্বাইয়ের কংগ্রেস অধিবেশনে ঐতিহাসিক ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন পণ্ডিত নেহরু। পরেরদিনই, অর্থাৎ ৮ আগস্ট অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করে আহমেদনগর দূর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। তার এই কারাবাসের সময় ছিল সুদীর্ঘ এবং এটাই ছিল তার শেষবারের মতো কারাবরণ। সারা জীবনে তাকে জেলে যেতে হয়েছিল নয় বার।
১৯৪৭ সালের আগস্টে নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার শাসনামলে ভারতে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়। এই সময়ে একটি ভারত-পাকিস্তান ও চীন-ভারত যুদ্ধ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ভারত-পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান নেহেরু-লিয়াকত চুক্তি করেন। ১৯৬৪ সালের মে পর্যন্ত তিনি ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
জওহরলাল নেহরু জানতেন, শিশুরাই দেশের ভবিষ্যত। তাই কীভাবে তাদের যত্ন নেওয়া যায়, তাদের কী কী প্রয়োজন- এই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি ছিল তার। ছোটদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ তিনি কখনোই ছাড়তেন না। বাচ্চারাও তাই ভালোবেসে তাকে ডাকত ‘চাচা’ নেহরু বলে ডাকত।
স্বাধীন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানোর সাথে সাথে তিনি শক্ত হাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তৎকালীন সময়ে সেই নিয়ে বিদ্রুপ করা হলেও পরবর্তীকালে দেখা গেছে, ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলার জন্যে তার এই ধরনের পদক্ষেপগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
শিক্ষা থেকে শিল্প সব দিকেই ছিল তার নজর। তিনি আইআইটি এবং আইআইএমের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থাপন করেছিলেন। সেই সাথে বহু শিল্প গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তার তত্বাবধানেই ভাখরা নাঙ্গল বাঁধ, রিহান্দ বাঁধ এবং বোকার ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছিল। এই শিল্পগুলোকেই তিনি আধুনিক ভারতের মন্দির বলে মনে করতেন।
তিনি ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। ১৯৫১-৫৬ তে তার নেয়া পদক্ষেপে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সূচনা হয়েছিল। দৃঢ় প্রজাতন্ত্রের প্রতিও তার আস্থা ছিল। ১৯৫৭ ও ১৯৬২ তে ভোটে জয়লাভ করার পরেও বিরোধীদের যথাযোগ্য সম্মান দিতেন তিনি। সেই সময় বহু লোক বহুভাবে তার সমালোচনা করতেন, কিন্তু তিনি কোনোদিন সেই সবা নিয়ে মাথা ঘামাননি। বিরোধী নেতারা যখন তার সমালোচনা করতেন তখন তিনি তাদের গুণ গান গাইতেন। ‘এক ভারত, অখন্ড ভারত’ তৈরির কথা বলেছিলেন তিনি। এছাড়াও নেহেরুর বিদেশ নীতি ছিল উল্লেখযোগ্য।
১৯৬২ সালের ১ম ভারত-চীন যুদ্ধের পরে নেহেরু অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কাশ্মীরে কিছুদিন বিশ্রাম নেন। ১৯৬৪ সালের মে মাসে কাশ্মীর থেকে ফেরার পরে নেহরু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। অবশেষে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে তিনি তার নিজ কার্যালয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত