আমাদের দেশে এনজিওগুলো কর্তৃক যে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা প্রচলিত তাতে দারিদ্র্য নিরসন নয় ঋণের জালে জড়িয়ে ফেলার প্রবনতাই বেশি। ব্যাপারটা কীভাবে ঘটে, তার একটা উদাহরণ দেয়া যাক।
ধরুন, নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির একজন মানুষ এনজিও ‘ক’ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিল। আর এই ঋণটা সে নিল তার দারিদ্র্য নিরসনের উপায় খোঁজার জন্যে নয়, ভোগ্যপণ্য কেনার জন্যে। ধরা যাক, এই ১০ হাজার টাকা দিয়ে ঐ মানুষটি একটি স্মার্টফোন কিনল। কিছুদিন পর যখন এনজিও ‘ক’ তাকে ঋণশোধের চাপ দেবে, সে তখন এনজিও ‘খ’-এর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেবে।
সেটা দিয়ে এনজিও ক-এর ঋণ শোধ করার পর বাড়তি টাকাও খরচ করে ফেলবে। যখন এনজিও খ-এর ঋণশোধের পালা আসবে, তখন আবার এনজিও জেড-এর কাছ থেকে নিয়ে তা শোধ করবে। শেষমেশ যখন জেড-এর ঋণশোধের চাপ আসবে, তখন হয়তো সে পালিয়ে যাবে।
এইভাবেই আমাদের সমাজের একশ্রেণির নিম্নবিত্তের প্রধান কাজই হয়ে দাঁড়াচ্ছে এক এনজিও থেকে আরেক এনজিওতে ঘুরে ঘুরে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বেড়ানো এবং কখনোই ঋণমুক্ত না হওয়া।
এদিকে ঋণগ্রহীতা পুরুষ হলে তার পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ বেশি বলে এনজিওরা ঋণ দেয়ার জন্যে পুরুষের চেয়ে মহিলাদেরই প্রাধান্য দিতে লাগল। কারণ একজন পুরুষ সহজে পালিয়ে যেতে পারলেও একজন নারীর পক্ষে তা এত সহজ নয়।
এটারই সুযোগ নিতে শুরু করল আবার আরেক ধরনের পুরুষ। একের পর এক বিয়ে করে স্ত্রীর নামে ঋণ নেয়া। তারপর অবস্থা বেগতিক দেখলে এই মহিলার ঘাড়ে সমস্তটা ঋণের বোঝা চাপিয়ে পালিয়ে যাওয়া।