ভয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে মৃত্যু ভয়, যদি মারা যাই। যেহেতু আমরা মৃত্যুর ঐ পারটা দেখি না।
আমরা অন্ধকারকে ভয় পাই। কিছু দেখতে পারছি না, সেজন্যে ভয় পাই। অর্থাৎ যেখানেই আমরা দেখতে না পাই, উপলব্ধি করতে না পারি, সেটাকেই ভয় পাই।
মৃত্যুকে আমরা ভয় পাই কেন? মৃত্যুকে কেন বলতে পারি না, ‘মরণ রে তুহ মম শ্যাম সমান’। কেন বলতে পারি না? কারণ অন্ধকার। মৃত্যুর পরে কী অপেক্ষা করছে, আমরা জানি না।
আবার যিনি জানেন, মৃত্যুর পরে কী অপেক্ষা করছে, তিনি বলতে পারেন, প্রভু, আমি প্রস্তুত তুমি যাকে পাঠানোর পাঠাও, আমি প্রস্তুত।
এবং অকাল মৃত্যুর ভয়, যে অকালে যদি মারা যাই! আসলে মৃত্যুর কোনো কাল-অকাল নাই। মৃত্যু যখন আসার তখনই সেটার কাল।
অকালে কেউ মারা যায় না, বিকালেও কেউ মারা যায় না। মারা যায় মানুষ তার যখন সময় আসে তখন।
কারণ মৃত্যু হচ্ছে একেবারে সুনির্দিষ্ট। যতদিন বাঁচার আপনি বাঁচবেন। যখন আপনার মৃত্যুর সময় হবে পৃথিবীর কোনোকিছু আপনাকে আর বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না।
আমরা অনেকে মরতে চাই না কেন? মারা গেলে ছেলেমেয়ের কী হবে?
আরে ছেলে-মেয়ে কি মানে আপনার ভাগ্য নিয়ে এসছে? না তাদের ভাগ্য নিয়ে এসছে? প্রত্যেকে নিজের জীবন নিয়ে আসছে। আপনি কিন্তু ছেলেমেয়ের মালিক নন, আপনি ছেলেমেয়ের পালক। ছেলেমেয়ের মালিক কিন্তু আল্লাহ।
অতএব ছেলেমেয়ের কী হবে- এটার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট।
আপনি বেঁচে থাকলেও ছেলেমেয়ের জন্যে কিছু করতে পারবেন না। আবার মারা যাওয়ার পরেও আপনার ছেলেমেয়ের কোনো অসুবিধা না-ও হতে পারে।
এবং আসলে পৃথিবীর যারা খ্যাতিমান হয়েছেন স্মরণীয় হয়েছেন বরণীয় হয়েছেন তাদের ৫০ শতাংশ মা-বাবা ছাড়া বড় হয়েছেন। স্নেহছায়া ছাড়া তারা বড় হয়েছেন। খ্যাতিমান হয়েছেন স্মরণীয় হয়েছেন বরণীয় হয়েছেন।
[প্রজ্ঞা জালালি, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯]