জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাব্যবস্থাকে যেভাবে দেখতে চেয়েছেন তার প্রতিফলনের জন্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, শুধু রুটিনমাফিক কথা বললে শিক্ষাব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে পুরো প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করে একমুখী ও বাধ্যতামূলক করেছেন।
দরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা অর্থের অভাবে এই বাধ্যতামূলক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না, এমন আশঙ্কায় তিনি প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে অবৈতনিক করেন।
গতকাল ‘বিশ্ব নাগরিকত্ব শিক্ষা প্রচারের মাধ্যমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইউনেসকো কর্তৃক অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়সমূহের প্রচার’ শীর্ষক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় ইউনেসকো ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানটি রাজধানীর ব্যানবেইস ভবনের বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৯টি বিভাগের ১৮টি মাধ্যমিক স্কুলে প্রচার চালাবে সংগঠনটি।
এ সাবেক উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন যাতে শিশুদের মধ্যে বৈষম্যের সৃষ্টি না হয়। শিশুদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হলে সারাজীবন তাদের মধ্যে এই বৈষম্য বোধটা থেকে যাবে।
আর যদি বৈষম্যহীন একটা চেতনা শিশুদের মধ্যে সৃষ্টি করা যায় তাহলে তারা সমাজে সমমর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারবে। এই কারণেই বঙ্গবন্ধু একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন।
তিনি এই কর্মশালায় তাত্ত্বিকভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বাইরের দেশে ঘুরিয়ে বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তার ওপর এসাইনমেন্ট ও মূল্যায়ন এমন একটি প্রোগ্রাম চালু করার পরামর্শ দেন।
এ ছাড়া তিনি এই কর্মশালায় মাধ্যমিকের পরিবর্তে নিম্ন মাধ্যমিক থেকে শুরু করতে এবং বিশ্ব নাগরিক হতে সবার মধ্যে সমানুভূতির দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাসানুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীর বিশ্বায়নের যুগ, সেখানে যেতে হলে আমাদের ন্যানো টেকনোলজির প্রসার ঘটাতে হবে।
কিন্তু আমাদের যে শিক্ষাব্যবস্থা তাতে আমরা ন্যানো টেকনোলজির যুগে যেতে পারব না। আমরা তিনটি শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করতে পারিনি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আমরা যেতে না পারলে তা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ’
বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মো. সোহেল ইমাম খানের সভাপতিত্বে সংগঠনের মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী, ইউনেসকো ঢাকা অফিসের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা হু হুয়া ফ্যান বক্তব্য রাখেন।