বাউলের শিরোমণি ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবসে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাউল, ভক্ত-অনুরাগীসহ পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত লালন আখড়াবাড়ি। ভাবজগতের মরমি গানে গানে মেতেছেন শিল্পীদের পাশাপাশি দর্শক-শ্রোতারা। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়া এখন পরিণত হয়েছে বাউলদের মিলনমেলায়। মরমি কবি ফকির লালন শাহ মানবতাবাদি-ভাবজগতের গানের রাজা। প্রায় দুই শতাব্দিকাল ধরে তার মানবদরদি গান মরমি মানসের তৃষ্ণা-রস মিটিয়ে আসছে। ফকির লালনের প্রধান কীর্তি মানবপ্রেম। তার ভাবজগতের মরমি গান ও সুরে সুরে ফুটে ওঠে মানবপ্রেম। গানের মাধ্যমেই তিনি মানবপ্রেম ও মানবতার জয়গান গেয়ে গেছেন।
লালন ভক্তরা জানান, লালন ফকির জীবদ্দশায় ভক্ত-শিষ্যদের নিয়ে সাধন-ভজন ও গান করতেন। বিশ্বে তার গান ও দর্শন ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে গবেষণাও চলছে। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’—ফকির লালনের এই অহিংস মর্মবাণী ছড়িয়ে মানুষে মানুষে ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করতে তাগিদ দেন সাধু-ভক্তরা।
এতে বাউল ও লালন একাডেমির শিল্পিরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন। শিল্পীরা গানে গানে রাতভর মাতিয়ে রাখেন দর্শক-শ্রোতাদের। ছেঁউড়িয়ায় কালিগঙ্গা নদীর পাড়ে গানের মূল অনুষ্ঠান ছাড়াও অডিটরিয়ামের নিচতলায় উন্মুক্ত চত্বরে বসেছে বাউল-সাধুর হাট। খণ্ড খণ্ড গানের আসর দর্শক-শ্রোতাদের এনে দিয়েছে আলাদা বৈচিত্র্য। গানের অনুষ্ঠান ছাড়াও বিশাল মাঠে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলায় তিন শতাধিক স্টলে বিভিন্ন জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা।
উল্লেখ্য, ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর লালন ফকির মারা যান। মৃত্যুর পর তার ইচ্ছানুযায়ী আখড়াঘরের মধ্যেই ফকির লালনকে সমাহিত করা হয়।
জেমস আহমেদ
মেহেরপুর,কুষ্টিয়া
প্রতিনিধি।