সাংবাদিক নিজামুদ্দিন আহমদ মৃত্যুবরণ করেন।
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩৪৬তম (অধিবর্ষে ৩৪৭তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯০১ : ইতালির পদার্থবিদ এবং বেতার যন্ত্রের অগ্রদূত গুগলিয়েলমো মার্কনি আটলান্টিক মহাসাগরের এক কুল থেকে অপর কুলে প্রথম সফলভাবে বেতার বার্তা প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
১৯৬৩ : কেনিয়া ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৮৬৬ : আলফ্রেড ওয়ের্নার, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইস রসায়নবিদ ও একাডেমিক।
১৮৮০ : আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ।
১৯৩৪ : আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাংবাদিক।
১৯৪০ : পবিত্র মুখোপাধ্যায়, বাঙালি কবি।
১৯৬৫ : ভারতে প্রথম সিরাম ভ্যাকসিন ও পেনিসিলিন প্রস্তুতকারক বিশিষ্ট ভেষজ বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক হেমেন্দ্রনাথ ঘোষ।
১৯৭১ : সাংবাদিক নিজামুদ্দিন আহমদ।
১৯৮৬ : একুশে পদক প্রাপ্ত বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরী।
২০০৫ : বাঙালি সাহিত্যিক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়।
সাংবাদিক নিজামুদ্দীন আহমদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয়দফা, ৬৯’র ছাত্রদের ১১ দফা ও গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
একাত্তরে তিনি নিয়মিত গণহত্যার সবশেষ খবর সংগ্রহ করতেন। দেশের অভ্যন্তরের ঘটনা ও যুদ্ধের যাবতীয় বর্ণনা নিয়মিত বিবিসি-কে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমকে তিনি জানাতেন, যা বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৯ সালে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার মাওয়া গ্রামে। বাবা সিরাজুল ইসলাম এবং মা ফাতেমা বেগম। ১৯৪৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেন বিক্রমপুর ভাগ্যপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন মুন্সিগুঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫১ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি এবং ১৯৫২ সালে তিনি এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন।
হরগঙ্গা কলেজে ছাত্রাবস্থায় তিনি সম্পৃক্ত হন রাজনীতিতে। ১৯৬১ সালে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে নির্বাচন দিলেন। নাজিমুদ্দিন আহমদ সে নির্বাচনে অংশ নিলেন কনভেনশন মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে। পশ্চিম বিক্রমপুর থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হলেন।
১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় করাচি থেকে প্রকাশিত ‘সিভিল এন্ড মিলিটারি গেজেট’ পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি দৈনিক মিল্লাত, দৈনিক আজাদ, ঢাকা টাইমস, পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।
বার্তা সংস্থা এপিপি, ইউপিআই, পিপিআই, রয়টার, এএফপি এবং বিবিসিতেও কাজ করেন নিজামুদ্দীন আহমদ। যুদ্ধ চলাকালীন ঢাকায় তখন বিদেশি গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি ছিলেন।
নিজামুদ্দীন তাদের প্রতিদিনই জানাতেন গণহত্যার সবশেষ খবর। তিনি দেশের অভ্যন্তরের ঘটনা ও যুদ্ধের যাবতীয় বর্ণনা নিয়মিত বিবিসি-কে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমকে জানাতেন, যা বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পুরনো ঢাকার ১২ নম্বর রোকনপুরের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও আলবদর বাহিনী। আর সন্ধান মেলেনি তার। ১২ ডিসেম্বর তার মৃত্যু দিবস পালিত হয়।
সূত্র: সংগৃহীত