ইন্টারনাল পরিচ্ছন্নতা অর্থাৎ মলমূত্র নিষ্কাশনটা পুরোপুরি হওয়া উচিৎ।
এবং যোগের যে আসন এই আসনের মধ্যে একটি আসন অত্যন্ত চমৎকার এই ইন্টারনাল ক্লিঞ্জিংয়ের জন্যে, মল পরিষ্কারকের জন্যে।
সেটার নাম হচ্ছে বঙ্গাসন।
এবং আমরা প্রাচ্যের মানুষরা এই আসনে সবসময় বসে অভ্যস্ত ছিলাম।
গ্রামেও কিন্তু আগে যখন জিয়াফত (জিয়াফত মানে হচ্ছে দাওয়াত) হতো, এখন থেকে ৫০ বছর আগে যখন চেয়ার ছিল না তখন মানুষ এভাবে বসত।
দেখা যেত, দাওয়াতে ১০০০ মানুষ এসছে। এত মাদুর কোথায় পাবে!
তো বসত এইভাবে। এবং কলাপাতায় খাবার দেয়া হতো।
এবং মহিলারা এই আসনটা রেগুলার প্র্যাকটিস করবেন।
কেন করবেন? নরমাল ডেলিভারির জন্যে।
নরমাল ডেলিভারির জন্যে এই আসনের কোনো বিকল্প নাই। এই আসন যখনই করবেন, আপনার পা ঊরু নিতম্ব তলপেটে চর্বি জমবে না।
যেমন, আমাদের মা-খালাদের আমরা কোনো চর্বি দেখি নাই। কারণ তারা এইভাবে বসে কী করতেন? ঘর মুছতেন। গ্রামে এইভাবে বসে মাটি দিয়ে লেপা হতো। তাদের ভুঁড়ি ছিল না।
আর ভুঁড়ি কমানোর জন্যে, পেট কমানোর জন্যে কত ব্যায়াম ডায়েটিং এটা সেটা!
আরে কিচ্ছু লাগবে না। শুধু বঙ্গাসন করেন। বহু আসনের উপকার হচ্ছে এই এক আসনে।
এটা করা হচ্ছে রসুলুল্লাহর (স) সুন্নত। রসুলুল্লাহ (স) মসজিদে নববীতেও এইভাবে বসেছেন, খাওয়া-দাওয়ার সময় এইভাবে বসেছেন। আবার এক হাঁটু গেঁড়ে এক পায়ে ভর করে এইভাবে বসেছেন।
এবং অর্ধবজ্রাসন! (নামাজে আমরা যেভাবে বসি) যখন উনি কথা বলতেন অর্থাৎ মজলিসে বসতেন তখন এই অর্ধবজ্রাসনে বসতেন।
এইভাবে যখন আপনি বসছেন আপনি আল্লাহর রসুলের একটা সুন্নত আপনার জীবনে কায়েম করছেন।
এবং এই সুন্নত কায়েম করাটা খুব সহজ, স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি! আবার একটা সুন্নত প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে অত্যন্ত সওয়াবের অত্যন্ত পুণ্যের। অন্তত রসুলুল্লাহকে বলা যাবে যে, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমিতো কিছুই করতে পারি নাই। আমি এই বঙ্গাসন করেছি।
আরবি নামটাও এখন থেকে মুখস্ত করে নেন যে ‘কারফাসা’। এই আসনের আরবি নাম হচ্ছে ‘কারফাসা’।
এবং ইমাম বোখারীর বিখ্যাত বই হচ্ছে, আল আদাবুল মুফরাদ, যে শ্রেষ্ঠ শিষ্টাচার। ‘আদাব’ মানে হচ্ছে শিষ্টাচার। সেই বইতে এই আসনের উল্লেখ রয়েছে।
নিউ সায়েন্টিস্ট পত্রিকার নিবন্ধে একবার একটি কার্টুন দিয়েছে যে, একজন কমোডে বসে খুব ম্মম্মম ম্মম্মম করছে অর্থাৎ ‘কষা’।
আর প্যানে বসে একজন খুব হাসছে হি হি হি হি…
এবং এইভাবে বসলে মলাশয় পরিষ্কার হতে যে সময় লাগে, কমোডে বসলে সময় লাগে তার তিনগুণ।
এইজন্যে কমোডে বসে সে ম্মম্মম করছে। আর এইভাবে বসে আহ! সে হাসছে তার দিকে তাকিয়ে। একটা চমৎকার কার্টুন! অর্থাৎ এটা সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার।
এই যে ‘কমোড’ এই কমোড এ-তো ব্যবসায়ীদের ব্যবসা! যখন মানুষের টাকা বাড়ে তখন কী হয়? ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন পণ্য তৈরি করে।
আমাদের দেশে কিন্তু কমোড ছিল না। ৮০’র দশক থেকে এই কমোড হওয়া শুরু করল একটু একটু করে।
এবং কমোডের মতন আনহাইজেনিক স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর আর কিছু নাই।
কিন্তু আমাদের কাছে এখন কমোড হয়ে গেছে ফুটানির পার্ট।
এবং পাবলিক টয়লেটে কমোডের চেয়ে আনহাইজেনিক কিছু নাই। আমরা প্রত্যাশা করব, মনছবি দেখব যাতে আমাদের সব পাবলিক টয়লেটগুলো প্যান হয়ে যায়। এবং আমরা ওখানে নির্ভাবনায় বসে বঙ্গাসন করতে পারি কিছু সময়ের জন্যে।
আর ঘরে যা কমোড বানিয়েছেন, যাদের পক্ষে সম্ভব, তুলে ফেলবেন। আর যদি তোলা সম্ভব না হয় ভবিষ্যতে কমোড আর লাগাবেন না।
আপনার কনস্টিপেশন হবে না, পাইলস হবে না। অনেক রোগ থেকে আপনি মুক্ত থাকবেন যদি শুধু এই বাংলা প্যান ব্যবহার করেন।
[কোয়ান্টামম সাদাকায়ন, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০]