সরজমিনে একাধিক মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে মাল্টিমিডিয়া মোবাইল সেট অর্থাৎ অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায় শিশুকিশোরদের। প্রাথমিকের গন্ডি পার না হওয়া এক শ্রেণির শিশু থেকে শুরু করে উঠতি বয়সীদের হাতে হাতে অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল সেট। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় ইন্টারনেটভিত্তিক নানা গেমস নিয়ে মেতে থাকে কিশোরদের দল। ফোনে টাকা বাজি ধরে লুডু খেলে বলেও জানা গেছে।
এছাড়া ফোনসেট এবং ইন্টারনেট হাতের মুঠোয় থাকায় সহজেই পর্নো ভিডিওসহ অশ্লীল ও অনৈতিক ভিডিও দেখার সুযোগ অনায়াসেই পেয়ে যাচ্ছে অপরিণত বয়সীরা। আর এসব শিশুকিশোরই একটু বড় হলে জড়িয়ে যাচ্ছে নানা অপকর্মে। দল বেঁধে আড্ডা দেয়া, মাদকদ্রব্য গ্রহণ, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে তারা। এসব কাজকে স্মার্টনেসও মনে করে তারা।
উপজেলর বিভিন্ন স্থানের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, পরিবারের অসচেতনতার কারণেই কিশোরেরা বখাটে হয়ে যাচ্ছে। অপরিণত বয়সে মোবাইল ফোন ব্যবহারে বাধা না দেয়ায় দিন দিন মোবাইল ব্যবহারে আসক্তি বেড়ে যাচ্ছে। লেখাপড়া থেকেও দূরে সরে যাচ্ছে এরা।
সন্ধ্যার পর বাজারে, রাস্তার মোড়ে আড্ডা দেয়া এবং গ্রামে-পাড়া-মহল্লায় তৈরি হচ্ছে তাদের একাধিক গ্রুপ। বড়দের সাথে বেয়াদবি, শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করতেও দ্বিধা করে না উঠতি বয়সীদের একটা শ্রেণী।
আধিপত্য নিয়েও পরস্পরের মধ্যে বিরোধে জড়াতে দেখা যায় তাদের। মূলত মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের ফলেই উঠতি বয়সীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা বলে শিক্ষক ও সচেতন অভিভাবকদের ধারণা।
এ ব্যাপারে আমতলী সরকারী কলেজের (অব.) সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন বিশ্বাস বলেন, মোবাইল ফোন অপ্রাপ্ত বয়স্কদের হাতে শিশু কিশোরদের বহুমাত্রিক অপরাধের দিকে ধাবিত করছে।
পরিবারের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। নতুবা শিশু কিশোররা ও উঠতি বয়সীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা বলেও তিনি মনে করেন।
সূত্র : মানবজমিন (১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১)