রমজান বা রামাদান শব্দটির উৎপত্তি আরবি ‘আর-রাম্দ’ থেকে। এর আভিধানিক অর্থ দহন, জ্বালানো বা পুড়িয়ে ভস্ম করে ফেলা। রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মানুষ দেহ-মনের টক্সিন ও যাবতীয় ত্রুটিসমূহ যেন জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দিতে পারে, সেই সুযোগ করে দিতেই মহিমান্বিত মাস ‘রমজান’।
নবীজী (স) ছিলেন সবার চেয়ে বেশি দানশীল এবং তা আরো বেড়ে যেত রমজানে। এসময় উদারতায় তিনি দ্রুতবেগে বয়ে চলা বাতাসকেও ছাড়িয়ে যেতেন।—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করলে সেই সাদাকা বা দান গ্রহীতার হাতে পৌঁছার আগেই আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। — তাবারানী
পানি যেভাবে আগুনকে নিভিয়ে ফেলে, দানও তেমনি পাপমোচন করে। — আনাস ইবনে মালেক (রা), মুয়াজ ইবনে জাবল (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ
দাতার হাত গ্রহীতার হাতের চেয়ে উত্তম। — হাকিম ইবনে হিজাম (রা), আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, নাসাঈ
রসুল (স) বলেছেন, ‘সবকিছুর জন্যেই যাকাত (শুদ্ধি প্রক্রিয়া) রয়েছে। শরীরের যাকাত হচ্ছে রোজা।’ — আবু হুরায়রা (রা); ইবনে মাজাহ
অর্থাৎ এ মাসটি হলো সংযমের মাস, দেহ-মনে শুদ্ধ হয়ে ওঠার মাস। রহমতের এ মাস দয়া ও ক্ষমার অনুশীলনের জন্যে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। মাগফেরাতের এ মাসে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও চারপাশের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করুন। সবার সঙ্গে হাসিমুখে সালাম বিনিময় করুন, তাদের খোঁজখবর নিন।
‘কোনো ভালো কাজকেই ছোট মনে কোরো না। ভাই বা বন্ধুকে হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানানো সদাচরণেরই অংশ। যত ছোটই হোক, যে-কোনো সহযোগিতাই ভালো কাজ।’ — আবু যর গিফারী (রা); মুসলিম
‘যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে, তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ো; যে তোমার প্রতি অবিচার করে, তাকে ক্ষমা করো।’ – মুসলিম
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘রোজা আমারই জন্যে এবং আমিই তার প্রতিদান দেবো।’– বোখারী ও মুসলিম
মানুষের প্রত্যেকটি সৎকর্মের নেকি আল্লাহ গুণিতক করেন। ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দান করেন। আর রোজার নেকি আল্লাহ নিজে দেবেন, কোনো সীমা ছাড়া, তাঁর ইচ্ছানুসারে।— আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম
তাই আসুন, এ মাসটিতে বেশি বেশি দান ও সঙ্ঘবদ্ধভাবে যাকাত আদায়ে সচেষ্ট হই। সমমর্মিতা, আত্মশুদ্ধি ও সৃষ্টির সেবায় লীন হই।