রিপোর্টার: এম সাখাওয়াত হোসেন হিমেল
”নিরাপত্তার সাথে, সমৃদ্ধির পথে”- এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে শিল্পাঞ্চল পুলিশের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অদ্য ৩০ অক্টোবর, ২০২১ খ্রি. তারিখে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১, আশুলিয়া, ঢাকার পুলিশ লাইন্সে শিল্পাঞ্চল পুলিশের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।
মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সেতু বন্ধনে কাজ করছে শিল্প পুলিশ: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী
শনিবার বিকালে সাভারের আশুলিয়ার শ্রীপুরে অবস্থিত শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত শিল্প পুলিশের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম। পুলিশ জনগনের বন্ধু হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, গামের্ন্টস শিল্প আমাদের টনক নড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল গামেন্টস সেক্টর নিয়ে। নানান ধরনের অসন্তোষ লেগেই থাকতো এ শিল্পে। সেগুলো নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রপ্তানী আয়ের চালিকা শক্তিকে আরও জোরদার করার জন্য ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠান (শিল্প পুলিশ) গড়েছিলেন। এই ১১ বছরে আমাদের ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ সুন্দর ভুমিকা পালন করছে বলেই মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন তৈরী হয়েছে। এই সেতুবন্ধনের জন্য আমরা আজ নিশ্চিন্তে থাকতে পারি। আমরা বলতে পারি শিল্পাঞ্চলে শিল্প পুলিশ কাজ করছে এজন্যই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও সুন্দর ভাবে কাজ চলছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, জীবন ও জিবিকার জন্য শিল্পের চাকা সচল রেকেছে বিধায়, করোনা কালীন সময়ে দেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয় ঘটেনি। অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার জন্য তিনি পোশাক কারখানার মালিকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিল্প পুলিশের কাজ হলো বিশৃঙ্খলা এবং উস্কানিমূলক কর্মকান্ডকে রোধ করা। এজন্য সবাইকে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে শিল্প পুলিশকে সহযোগীতা করার আহন জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান বলেন, ২০১০ সালে শিল্প পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে এখন শান্তিপুর্ন পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছে। শিল্প পুলিশ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরী করে যে কোন সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। আমাদের অর্থনীতির মূল শক্তি শিল্পের বিকাশ। এই শিল্পের বিরুদ্ধে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলাসহ পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শিল্প পুলিশের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আর শিল্প টিকে থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা এবং সাহসের কারনেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি এই শিল্প পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেছেন বিধায় শিল্প খাতও এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আমাদের, তাই এদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের প্রতিহত করার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। এজন্য পুলিশের সম্প্রসারন করা দরকার।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনসহ শিল্প পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোঃ হাতেম ও শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদারসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে, সন্ধ্যা ০৬.৩০ ঘটিকায় আলোচনাসভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিশিষ্ট শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ডা. বেনজীর আহমেদ কন্ঠ শিল্পী সামিনা চৌধুরীর সাথে যৌথ সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে আগত প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ এসময় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।